December 23, 2024, 12:24 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রেলওয়ের আওতায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত এক মাসে ভারত থেকে পণ্য পরিবহনে এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে শুধু রাজস্ব আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৬ হাজার ২১৫ টাকা। জানা গেছে এ সময়ে ভারত থেকে সর্বোচ্চ ১৬২টি পণ্যবাহী রেক (মালবাহী ট্রেনের কোচ) এসেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে খালি রেক ফেরৎ গেছে ১৫৯টি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানা ন এ তথ্য।
রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তার কার্য্যলয় সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের দুর্যোগ ও মহামারির দ্বিতীয় দফার লকডাউনে যাত্রীবাহী সব ট্রেন বন্ধ। এ কারণে পণ্যবাহী ট্রেনগুলোর দিকে সর্বোচ্চ সময় দেওয়া হয়। তাছাড়া যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রেনগুলো চলাচলে সময়ক্ষেপণ কিংবা ট্রেন ক্রসিং (এক ট্রেন স্টেশনে রেখে অন্য ট্রেনকে পার করা) সমস্যায় পড়তে হয়নি। চাহিদা মোতাবেক পাওয়া গেছে ইঞ্জিন, ক্রু (চালক) এবং ট্রেন পরিচালক (গার্ড)। এজন্য চলতি বছরের শুধু এপ্রিল মাসেই ভারত থেকে ১৬২টি পণ্যবাহী ট্রেন আসা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে গম ৪০, চাল ২১, ভুট্টা ৮ ও পাথর ২৭। এছাড়া ৬০টি পেঁয়াজ, খৈল ফ্রাইআশ, বক্সেন পাথরসহ পণ্যজাত হস্তান্তর করেছে ভারত।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন জানান, ভারত থেকে পণ্যসামগ্রী আসার জন্য পাকশী বিভাগীয় রেলওয়েতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য চাহিদা পূরণ জনবলের কর্মসংস্থান, দেশে রাস্তাঘাট নির্মাণ, উন্নয়নমূলক কাজের পণ্যাদি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে। পাকশী রেল বিভাগে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এতে উভয় দেশে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি সুসম্পর্কের ‘প্লাটফর্ম’ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, স্বাধীনতার পর ভারত থেকে বাংলাদেশে মাসে গড়ে ৭০-৮০টি পণ্যবাহী ট্রেন আনা নেওয়া সম্ভব হতো। কারণ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের কারণে পণ্যবাহী ট্রেনগুলো চলাচলে কিছু সময় লাগতো। চাহিদা থাকলেও সময়মতো ইঞ্জিন, ক্রু (চালক) ও পণ্যবাহী ট্রেন পরিচালক (গার্ড) পাওয়া যেতো না। করোনাকালীন মহামারিতে সরকারি সিদ্ধান্তে যাত্রীবাহী সব ট্রেন বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রেনগুলোর চলাচলে গতি বেড়েছিল।
পাকশীর ডিটিও আনোয়ার হোসেন আরও জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাকশী বিভাগ সর্বোচ্চ রেকর্ড ১৬২টি পণ্যবাহী রেক ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।
জানা যায়, ভারত থেকে পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশে আনা হতো। খাদ্য ঘাটতি যেন সৃষ্টি না হয়, সেই কারণে রেলবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং রেলপথমন্ত্রী, রেলওয়ে কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ও সার্বক্ষণিক ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করায় এ সময়ে ভারত থেকে রেলপথে এতো পণ্যবাহী ট্রেন আনা-নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ভারত থেকে আসা ১৬২টি ট্রেনের পণ্যবাহী রেক গ্রহণ ও বাংলাদেশ থেকে ১৫৯টি খালি রেক ভারতে পাঠানো হয়েছে। যা স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সর্বোচ্চ রেকর্ড।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ চালু হওয়ার পর সর্বোচ্চ পণ্যবাহী রেক ভারত থেকে কখনোই বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের জুন মাসে প্রথম এক মাসে ১২৬টি ভারত থেকে পণ্যবাহী ওয়াগন পণ্য পরিবহনের কারণে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার ৭৫২ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল।
Leave a Reply