December 22, 2024, 10:12 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
হচ্ছে না লালন সাঁইয়ের দোল উৎসব। বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে লালন একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। চলমান করেনার কারনে হচ্ছে না উৎসব বলে তিনি জানান।
করোনার কারণে গত বছর অক্টোবরে লালন ফকিরের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও বাতিল করেছিল লালন একাডেমি।
আগামী ২৮ মার্চ (১৪ চৈত্র) থেকে দোল উৎসব শুরু হওয়ার কথা ছিল। উৎসবটি চলে থাকে তিন দিন।
জেলা প্রশাসক বলেন, কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক। এ পর্যন্ত ৯১ জন মারা গেছে। জেলাতেই ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত।
তিনি জানান এই পরিস্থিতিতে বড় ধরনের জমায়েত চরম ঝুঁকিপূর্ণ। সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সাথে পরামর্শ করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
লালন একাডেমি সূত্রে জানা যায়, বাউল গুরু লালন ফকিরের জীবদ্দশা থেকেই এই দোল উৎসবের চল। প্রতিবছর চৈত্র মাসের ভরা পূর্ণিমায় এ উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। দুর-দুরান্ত থেকে হাজার হাজার বাউল আসেন এ উৎসবে যোগ দিতে।
এদিকে বাউল-ফকিররা চলমান পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও তাদের ধর্মীয় রেওয়াজ পালনের জন্য ছোট করে হলেও সাধুসঙ্গ করার দাবি জানিয়েছেন।
লালন একাডেমির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম হকও জানান বাউলরা তার সাথে দেখা করছেন এবং এমন দাবি জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন লালনের প্রতিটি উৎসবের সাথেই বাউল ধর্মেও যোগ রয়েছে। রয়েছে কিছু নিজস্ব ধর্মীয় রীতি। ফকির লালনের মৃত্যুর পরও সেই রেওয়াজ চলে আসছে।
গত বছর পয়লা কার্তিকে লালনের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান হয়নি। পুরোপুরি লকডাউনে ছিল আখড়াবাড়ি। সেই সময় নির্দিষ্ট কিছু বাউলকে ভেতরে ঢুকতে দিয়ে ধর্মীয় আচার পালন করতে দেয়ার দাবি করেন বাউল-ফকিররা। কিন্তু প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না অনুমান করেই অনুমতি দেয়নি। এবারও তাই কিছু করার নেই বলে তিনি জানান।
ফকির আলাউদ্দিন শাহ বলেন, বাউলদের ধর্ম হলো লালনের দর্শন। ধর্ম পালন বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কারো থাকা উচিত নয়।
লালন একাডেমির সাবেক খাদেম এবং বাউলশিল্পী সালাম শাহ বলেন, ‘আমরা মাজার খুলে দেয়া হোক, সাধুসঙ্গ হোক।
ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, ‘ধর্মীয় রীতি পালনের ফকিরদের দাবি যৌক্তিক। অন্য সব ধর্মীয় বা উপাসনাবিষয়ক কার্যক্রম চলছে। সেই হিসেবে নির্দিষ্ট ফকিরদের দিয়ে দোলপূর্ণিমার ২০০ বছরের রীতি পালন করা যেতেই পারে। কিন্তু দোলপূর্ণিমা উৎসবের খবর জানাজানি হলে বাউল-ফকিরদের আটকানো যাবে না। এই কারণেই সম্ভবত প্রশাসন ঝুঁকিতে যাচ্ছে না।
Leave a Reply