December 22, 2024, 9:04 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, রাবি/
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানকে বাসভবনে অবরুদ্ধের পর এবার প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ‘চাকরি প্রত্যাশী’ ছাত্রলীগের নেতারা।
সোমবার রাত ৯টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে সারারাত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগের এই নেতারা। সকালে উপাচার্যের বাসভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করে ছাত্রলীগ নেতারা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে অফিস চলাকালীন সময়ে রেজিস্ট্রার দপ্তরের এড-হকে জালাল নামের একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭ টায় সময় চাকরি প্রত্যাশী ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদেকুল ইসলাম স্বপন এবং রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে সাক্ষাত করতে বাসভবনের ভেতরে যান।
আন্দোলনকালে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালের এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, ‘ ১৯৭৩ এর এ্যাক্ট অনুযায়ী চারটা বিশ্ববিদ্যালয় চলে তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি। গত কয়েকদিন আগে দেখেছি উপাচার্যের উপর কিছু কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাচ্ছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে একটা নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে।
আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে জানতে চেয়েছি তারা এটি পারে কিনা? তখন স্যার বলেছেন এটা ৭৩ এর এ্যাক্টের লঙ্ঘন। এটা তাদের পার্সোনাল ইন্টারেস্টের জায়গা থেকে আমাকে ব্লক করছে। আমরা কারণ জানতে চেয়েছি কিন্তু স্যার কারণ জানাতে পারেন নি। তখন আমরা বলেছি আপনিতো ৭৩ এ্যাক্টের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছেন না। স্যার যতক্ষণ না ব্যাখ্যা দিতে পারছেন ততক্ষণ আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচী চলবে।
তবে উপাচার্য বিশ্রামে থাকায় তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে চান নি। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আস্বস্ত না করলে বাহিরে এসে তারা উপাচার্যের ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আজ এড হকে একজনের চাকরি হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সত্ত্বেও একজনকে চাকরি দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না আমরা সেটি জানতে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম।
বিষয়টি নিয়ে গতরাতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী একটা ছেলেকে চাকুরি দেওয়ার জন্য। যেহেতু নিয়োগ বন্ধে শিক্ষামন্ত্রণালনের নির্দেশনা রয়েছে তাই আমি সচিবকে জানিয়েছি তিনি আমাকে নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং নিয়োগ দিয়েছি। পরে কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতা তার সঙ্গে সন্ধ্যায় দেখা করতে আসেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে চাকরির জন্য আবেদনকারী ছাত্রলীগের নেতাদের নিয়োগ দিতে দাবি জানায়। তাদেরকে আমি বলি নিয়োগ প্রদানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরে তারা আমার বাড়ির গেটে তালা লাগিয়ে দেয়।
গত ১০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব চিঠি দিয়ে রাবিতে সকল নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে উপাচার্যকে নির্দেশনা দেন।
Leave a Reply