December 23, 2024, 12:54 am
দৈনিক কুস্টিয়া প্রতিবেদক/
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনার্স ও মাস্টার্স সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারবে। রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কশিমনের (ইউজিসি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি জানায়, করোনার কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসির সদস্যরা বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঝুঁকি থাকায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফেস টু ফেস শিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প হিসেবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করলেও পরেীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে শিক্ষার্থীদের একদিকে যেমন পাঠ্যবিষয় প্রস্তুত ও চর্চা করতে অনীহা রয়েছে, অপরদিকে যথা সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠান সম্ভব না হওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছেন।
এ অবস্থার অবসানে পরীক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত উপায় নির্ধারণে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ইউজিসি’র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর করোনার সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—
১. বিশ্ব মহামারি কোভিড-১৯ সংকটের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
২. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।
৩. সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
৪. করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর সর্বোচ্চ জন্য এক ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে।
৬. কোভিড-১৯ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে হবে।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিনস কমিটি, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পরীক্ষার মান নিয়ে যেনও কোনও প্রশ্ন না ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ তাড়াহুড়া না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন।
সভায় উপাচার্যরা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেদেরকে পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আলাদা করে নিচ্ছে। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না হলে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেওয়া দরকার। সম্প্রতি বিজ্ঞাপিত বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের সময় বাড়াতে পিএসসিকে চিঠি দেওয়ার জন্য ইউজিসিকে অনুরোধ করেন উপাচার্যরা।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপ ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ইউজসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মো. কামাল হোসেন যুক্ত ছিলেন।
Leave a Reply