December 21, 2024, 11:06 pm
দৈনিক কুষ্টিয়ার সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর হলেন ড. আমানুর আমান।
ড. আমানুর আমান অনেকগুলো কৃতিত্বের অধিকারী। তিনি একাধারে গবেষক, লেখক, কবি, কলামিস্ট। অত্যুজ্জল সাংবাদিকতা অঙ্গনেও। কাজ করে চলেছেন সমাজ-রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তাঁর গবেষণার ভাষা ইংরেজী ; গবেষণার বিষয় সমাজ, রাজনীতি, উন্নয়ন, সু-শাসন, নারী নেতৃত্ব ও ক্ষমতায়ন ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা।
লিখিত গ্রহ্নের সংখ্যা ১৮। গবেষণা গ্রহ্নের সংখ্যা-১৩ ; ইংরেজী ভাষায়। বাংলা ভাষায় লিখিত গহ্নের সংখ্যা-৫।
ড. আমান কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের রমানাথপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন ১৯৭৩ সালে। তার পিতা সামসুদ্দিন মোলা ; মাতা সামসুন্নাহার বিশ্বাস। তিনি এসএসসি পাশ করেন এই ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ওসমানপুর হাই স্কুল থেকে ; এইচএসসি করেন খোকসা কলেজ থেকে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে অনার্স সহ মাষ্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. আমানুর আমান ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে এম.ফিল (M. Phil) ডিগ্রি অর্জন করেন। পিএইচডি (PhD-Doctor of Philosophy) অর্জন করেন ভারতের দার্জিলিং-এর ইউনিভার্সিটি অব নর্থ বেঙ্গল ( University of North Bengal) থেকে ২০১১ সালে।
সাংবাদিকতায় ড. আমানুর আমানের রয়েছে এক বর্ণাঢ্য ও প্রসারিত ক্যারিয়ার ; ছাত্র জীবনেই প্রবেশ এই অঙ্গনে। ১৯৯১ সালে কলেজে অধ্যয়নকালীন অধুনালুপ্ত জাতিয় দৈনিক ভোর পত্রিকার ¯’ানীয় সংবাদদাতা হিশেবে সাংবাদিকতায় আত্মপ্রকাশ। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পর যোগদান করেন জাতীয় দৈনিক আজকের কাগজের (অধুনালুপ্ত) প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে। পরে ১৯৯৬ সালে আজকের কাগজের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান। এই সময় তিনি স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়া পত্রিকার স্টাফ করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে আমান স্থানীয় দৈনিক বজ্রপাত পত্রিকার বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৯৭ সালে ছাত্রাবস্থাতেই তিনি স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি জাতীয় দৈনিক সংবাদের কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা হিসেবে দু’বছর কাজ করেন। এছাড়া তিনি সাপ্তাহিক খবরের কাগজ, সাপ্তাহিক শিক্ষা বিচিত্রাতে নিয়মিত কলাম লিখেছেন।
আমান ২০০২ সালে ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলী স্টার-এ কাজ শুরু করেন। দি ডেইলী স্টার-এ (The Daily Star) তিনি কুষ্টিয়ার পাশাপশি খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন। ২০১০ সালে ড. আমান কুষ্টিয়া থেকে ইংরেজি সাপ্তাহিক দি কুষ্টিয়া টাইমসের (The Kushtia Times) প্রকাশনায় হাত দেন। বর্তমানে তিনি পত্রিকাটির মালিক হিসেবে সম্পাদক ও প্রকাশক। ২০১১ সালে তিনি জেলার ঐতিহ্যবাহী বাংলা দৈনিক ’দৈনিক কুষ্টিয়া’র (The Dainik Kushtia) সম্পাদনার সাথে সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে তিনি উক্ত দৈনিকের মালিক, সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া, ভারত, শ্রীলংকা, আমেরিকা ও কানাডাসহ আর্ন্তজাতিক প্রিন্ট মিডিয়ায় তার বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ভারতের দার্জিলিং টাইমস-এ নিয়মিত লিখছেন।
সাংবাদিকতার স্বীকৃতি স্বর“প আমান ইতোমধ্যে পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি ২০০৫ সালে দি ডেইলী স্টার’র (The Dily Star) ’স্পেশাল এওর্য়াড’ পান। শিশু শ্রম বিষয়ে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে লেখালেখী ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমান ২০০৫ সালে আর্ন্তজাতিক সংস্থা আই,এল,ও কর্তৃক পুরস্কৃত হন। পরবর্তীতে এনজিও সেতু ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (বিটিইউকে) আমানকে পৃথকভাবে সংবর্ধিত করে। শিশু শ্রম বিষয়ে তার একাধিক রিপোর্ট বেশ কিছু আর্ন্তজাতিক প্রিন্ট মিডিয়া ও আর্ন্তজাতিক গবেষনা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. আমান বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী ছিলেন। তিনি ২০০৯-২০১০ সেশনে Apex Club of Banglades ‘র কুষ্টিয়া ইউনিটের জেনারেল সেক্রেটারী ছিলেন।
তিনি বংলাদেশ ভারত মৈত্রী সমিতির আজীবন সদস্য ও সংগঠনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার যুগ্ম-সম্পাদক। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক। তিনি ২০১৪ সালে কুষ্টিয়ার প্রায় ৪০টির মতো সামাজিক সংগঠন নিয়ে গড়ে তোলেন সম্মিলিত সামাজিক জোট। বর্তমানে তিনি এ সংগঠনের চেয়ারম্যান। এছাড়াও, তিনি জেলার একাধিক সরকারী ও বেসরকারী সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য/উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন পদমর্যাদায় সেবা কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।
আমান ২০০৬ সালে গ্রামীন পর্যায়ে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় সহায়তা করতে একটি বৃত্তি প্রকল্প হাতে নেন। প্রতিষ্ঠা করেন তার পিতার নাম অনুসারে “সামসুদ্দিন মোল্লাা ফাউন্ডেশন”। তাঁর গবেষণা থেকে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তিনি উক্ত প্রতিষ্টানে প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন লাভ করে। এটি খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে এটি জেলার বির্স্তীণ গ্রামীণ এলাকায় গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি সহায়তা প্রদান করছে। এ ফাউন্ডেশন প্রতিবছর ৫০০’র অধিক গরীব ও মেধাবী শিক্ষর্থীর লেখাপড়ার খরচ বহন করে। তিনি ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক।
কর্মজীবনে ড. আমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মর্কতা।