December 22, 2024, 4:53 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক: কুষ্টিয়া কুমারখালীর দুগ্ধ খামারিরা দুধ বিক্রি না হবার কারনে রয়েছেন প্রচন্ড বিপাকে। বিপজ্জনক করোনা ভাইরাস আবির্ভাবের পর গত ২৫ মার্চ লকডাউন ঘোষনার পর হতে তাদের এই দুরবস্থা শুরু হয়েছে বলে একাধিক খামারী জানিয়েছেন।
ভোক্তাগীরা জানান, প্রতিদিন তাদের খামারের উৎপাদিত প্রায় ৮ হাজার লিটার দুধ থেকে তৈরীকৃত ছানা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। এবং কুমারখালী শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ১০ হাজার লিটার ও কুষ্টিয়া শহরে ১২ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করা হয়। এবং বিভিন্ন খামারের উৎপাদিত দুধ ব্রাক চিলিং সেন্টার, শিলাইদহ চিলিং সেন্টার ও আল্ট্রা-কোল্ড সেন্টার দুধের ফ্যাট অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে তাদের নিকট থেকে ক্রয় করে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে বর্তমানে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় এবং অঘোষিত লক ডাউনে কোল্ড সেন্টার গুলোও তাদের নিকট থেকে দুধ ক্রয় করছে না যেকারনে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ প্রতিটা খামারীর অবিক্রীত রয়ে যাচ্ছে। প্রথমদিকে দুধ থেকে ছানা তৈরী করে সংরক্ষণ করলেও এখন আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। যেকারনে কম দামে দুধ বিক্রি এবং অনেক ক্ষেত্রে দুধ দীর্ঘ সময় বিক্রি না হওয়ার কারনে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফেলে দিতে হচ্ছে। অপরদিকে অধিকাংশ খামারে ১০ থেকে ১৫ টি গাভী রয়েছে বর্তমানে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারনে তারা আরো বিপাকে পড়েছেন গমের ভূষি প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০০/৩০০ টাকা, ধানের ভূষির দাম বেড়েছে ১৫০/২০০ এবং খড়ের দাম প্রতি হাজারে ১৫০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানান। প্রতিদিন গড়ে খামারীদের লোকসান হচ্ছে তের লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা।
এবিষয়ে কুমারখালী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নুরে আলম সিদ্দিকী সামগ্রিক বিষয়ে জানান কুমারখালী উপজেলায় বিশেষ করে ৫ টি ইউনিয়নে ৪৫৮ টি দুগ্ধ খামার রয়েছে এবং খামারগুলোতে গাভী রয়েছে ৩০/৩৫ হাজার। প্রতিদিন খামারগুলো থেকে ৩০/৩১ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এই খামারগুলোয় প্রায় ১ হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করে। করোনা ভাইরাসের কারনে দুধ বিক্রেতারা যেমন বিপাকে পড়েছেন সেই সাথে সঠিকভাবে গবাদিপশুর খাবার দিতে না পারায় পশু গুলোর স্বাস্থ্য ভেঙে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অধিকাংশ গাভী দুধ দিতে অক্ষম হয়ে পড়বে। এবং সেই সাথে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবে খামারীরা।
তিনি বলেন খামারীদের টিকিয়ে রাখার জন্য ইতিমধ্যে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রণোদনার আবেদন করা হয়েছে। এবং যে সব খামারিদের ব্যাংক লোন রয়েছে তাদের ঋণের সুদ মওকুফের চেষ্টা করা হচ্ছে।
Leave a Reply