December 31, 2024, 12:01 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ থেকে সদ্য পাস করা ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি শেখ জামিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে পলাতক ছিল।
পুলিম জানায় বুধবার সকালে মাগুরা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে এসব কথা জানিয়েছেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম। এ নিয়ে এ মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তিন্নির মা হালিমা বেগমের করা মামলায় আটজনকে আসামি করা হয়। তিন আসামি এখনো পলাতক।
উলফাত আরা তিন্নি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া বাজারের মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর মেয়ে। ১ অক্টোবর রাতে তিন্নিকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় প্রথমে ধর্ষণ মামলা হয়। পরে মেডিকেল টেস্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. তাপস কুমার সরকার জানান তিন্নি আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে শোয়ার ঘর থেকে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় তিন্নির মরদেহ উদ্ধার বরা হয়। পরিবারের দাবি, তিন্নি ধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জা ও ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তিন্নি ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
মৃত্যু নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দেয়। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এটি যেমন সামনে আসে তেমনী আসছে তিন্নির সাবেক ভগ্নিপতি জামিরুলের খারাপ ভুমিকার বিষয়টি। মনে করা হচ্ছে জামিরুলের নির্যাতনের শিকার হয়ে অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে তিন্নি।
তিন্নির খালাতো ভাই মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নির বড়বোন মিন্নির সঙ্গে একই গ্রামের পুনুরুদ্দিনের ছেলে জামিরুলের বিয়ে হয়। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবার মিন্নিকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে জামিরুল। এজন্য জামিরুল নানা ভাবে তিন্নির পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।
এরই জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিন্নিদের বাড়িতে এসে জামিরুল বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ভাংচুর চালায়। পরে রাত ১০টার দিকে জামিরুল আরও ১৫/২০ জন লোক নিয়ে তিন্নিদের বাড়িতে হামলা করে। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তিন্নি বাড়ির দুই তলায় নিজের ঘরে পড়ছিলেন। এসময় জামিরুল লোকজন নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে তিন্নিকে চরম মারধর করে।
একপর্যায়ে জামিরুল তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। এর ১০ মিনিট পরেই তিন্নির মা ও বোন বাড়ির দুই তলায় গিয়ে তিন্নির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।
এব্যাপারে তিন্নির মা হালিমা বেগমের অভিযোগ ঘটনার দিন তিন্নি সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া থেকে এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফেরার পথে জামিরুল ইসলাম তাকে হুমকি দেয়। সে তাকে ক্ষতি করবে বলে জানায়।
হালিমা বেগমের দাবি তিন্নিকে নির্মম নির্যাতনের পর পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
Leave a Reply