December 23, 2024, 2:20 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
জাতি গ্রভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারিতে ভাষার জন্য শহীদ হওয়া সেই বীরদের। এরই দিন শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় অভিষিক্ত। সকাল থেকেই সারাদেশের আনাচে-কানাচে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক শহীদ মিনারে ঢল নামে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষের। মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসতে দেখা যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে।
কুষ্টিয়াতেও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে দিনটি। কয়েক দিন জুড়েই জেলা শহর ও উপজেলাগুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহে নানা আয়োজন করে ভাষা শহীদদের সম্মান জানানো হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে চলতি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত জেলা জুড়ে আলোচনা, বইমেলা সহ নানা আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার দিবসের প্রথম প্রহরে জেলা প্রশাসন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ করে। জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন শহীদ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। সকালে শহীদ মিনারে বেদী থেকে পলাশী পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে দেখা যায় শ্রদ্ধা জানাতে আসা শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষকে দীর্ঘ লাইন। খালি পায়ে বুকে কালো ব্যাজ পরে ব্যানার ও পুস্পস্তবক নিয়ে প্রভাতফেরি করে ধীর পায়ে শহীদ মিনারের দিকে এগোতে দেখা যায় তাদের। ভোর রাত থেকেই প্রভাতফেরি নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে এগিয়ে যান সাধারণ মানুষ। বিবিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন চত্বরে তিনি দিনের একটি বই মেলার উদ্ধোধন করে জেলা প্রশাসক।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
১৯৫২ সালের এই দিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসক গোষ্ঠির চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এরআগে একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি।
Leave a Reply