December 22, 2024, 4:46 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সম্প্রতি কুষ্টিয়া জেলায় স্থাপিত ৪টি মডেল মসজিদের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছে ওজোপাডিকো ও পিডিবি এমন খবর নিয়ে বেশ কথা চলছে। এই বিলের দায় নিতে চাইছে না কেউ। চলছে চিঠি চালাচালি। সবগুলো মসজিদ মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা বকেয়া বিল জমেছে। পরিশোধের দায়িত্ব নিচ্ছে না মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন। দিনে দিনে বিলের অংক ভারি হচ্ছে, চাপে পড়ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
জানা গেছে, এসব মসজিদগুলোতে একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল সরকারের পরিধোধ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে এসব জায়গাগুলো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। এজন্য সৃষ্টি হয়েছে এ ধরনের পরিস্থিতি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়ার উপপরিচালক হেলাল উজ জামান জানান, সদ্য নির্মিত দেশের সব মডেল মসজিদ কাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টারগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব ইসলামিক ফাউন্ডেশনের। সেই হিসেবে কুষ্টিয়া সদরসহ অপর ৫টি উপজেলায় স্থাপিত মডেল মসজিদগুলোও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায়। কিনি বলেন চারটি উপজেলার সবগুলো মডেল মসজিদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে গেছে।
তিনি জানান, তার দফতর থেকে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে লেখা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এ খাতে টাকা বরাদ্দ দিলেই তারা বিল পরিশোধ করতে পারবেন বলে জানান।
তিনি জানান, মডেল মসজিদগুলোর প্রতিটিতে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল সরকার পরিশোধ করবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটা পরিপত্র জারি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এসব মডেল মসজিদগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে অনেক বেশি। কুষ্টিয়া মডেল মসজিদে প্রতিটায় ৮ টন ক্ষমতা সম্পন্ন ৮টি এসি লাগানো আছে।
তার মতে, মসজিদ সংশ্লিষ্টদের সজাগ হওয়া উচিত ছিল।
বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৩ নম্বর পৌর ওয়ার্ড কুঠিপাড়া এলাকায় স্থাপিত মডেল মসজিদে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৪ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়ে চলেছে। সে হিসেবে প্রতি মাসে বিল আসছে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো।
প্রতি মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকার হিসেবে সর্বশেষ মোট বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭৮ টাকা। ভেড়ামারা মডেল মসজিদেও এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিল বকেয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা।
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এসএম নাসির উদ্দীন জানান, এ বছরের শুরুতেই মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার মডেল মসজিদে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় পল্লী বিদ্যুৎ। মিরপুর মডেল মসজিদ প্রথমদিকে তিন মাসের বিল পরিশোধ করলেও এ বছর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৪ মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। দৌলতপুর মডেল মসজিদের শুরু থেকে এখন কোনো বিল পরিশোধ না করায় সেখানে বিল বকেয়া হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৭১১ টাকা।
কুষ্টিয়া ওজোপাডিকো কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা মডেল মসজিদের বকেয়া বিল পরিশোধের তাগাদা দিয়ে মসজিদ কমিটিকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এ বিল পরিশোধের দায় নিচ্ছে না কেউ। তিনি জানান, চরম ঝামেলায় পড়েছে তার অফিস। কারন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার আর কোন সুযোগ কারোরই নেই।
বিষয়টির সুরাহা করতে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় ও আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে একাধিকবার উত্থাপিত হলেও সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ আসেনি বলে জানা যায়।
এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি জেলা প্রশাসনের কেউ।
কুষ্টিয়া সদর মডেল মসজিদের সভাপতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, মসজিদগুলোর মেইন্টেনেন্সের দায়িত্বে মূলত ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ওনারাই ভালো বলতে পারবেন কিভাবে আর্থিক সংস্থান হচ্ছে।
Leave a Reply