December 22, 2024, 12:56 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় স¤প্রতি ঘটে যাওয়া ডাকাতির ঘটনা তদন্তে একটি রোমহর্ষক জোড়া খুন রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৫ জনকে। উদ্ধার হয়েছে জোড়া লাশ। উদ্ধার হয়েছে ডাকাতি হওয়া জিনিসপত্র।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংএ জেলা পুলিশ সুপার খায়রুল আলম ঘটনার পুরো জানান।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৭ জুন রাতে ১৭-১৮ জনের একটি ডাকাত দল গড়াই নদের আইয়ুবের ঘাট চরে একত্রিত হয়। তারা খোকসার বাজারের ব্যবসায়ী অশোক এবং তাঁর ভাই অসিম পালের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে ডাকাত দলের সদস্য সামাদ এবং ফারুকের সঙ্গে দলের অন্য সদস্যদের মতবিরোধ ঘটে। ক্ষিপ্ত হয় অন্যরা। সবাই মিলে সামাদ এবং ফারুককে জবাই করে হত্যা করে লাশ বালুচাপা দেয় সেখানেই।
পরে পরিকল্পলা অনুযায়ী ওই দিন রাতে অশোক এবং অসিমের বাড়িতে ডাকাতি করে তারা।
এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় হয়। প্রশ্নবিদ্ধ হয় পুলিশ প্রশাসন ও নিরাপত্তা। ঘটনাটি ঘটে, থানার কয়েকশ গজ দুরে।
ডাকাতির ঘটনার পরের দিন অসিম পাল বাদী হয়ে খোকসা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
এ ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ও তত্বাবধানে কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটনার সূত্র পায় পুলিশ। ডাকাতদের সন্ধানও পাওয়া যায়। গত সোমবার রাতে রাজবাড়ীর পাংশা এবং কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রাজবাড়ীর পাংশা থানার বসা গ্রামের মনছের মণ্ডলের ছেলে মতিয়ার মণ্ডল (৪৭) ও তাঁর ভাই শান্ত মণ্ডল (২০)। কুষ্টিয়ার খোকসা থানার ওসমানপুর কলপাড়া এলাকার মজিদ শেখের ছেলে সাহস শেখ (২১), একই উপজেলার খানপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে রয়েল হোসেন (২১) এবং বসোয়া গ্রামের দুলাল প্রামাণিকের ছেলে শুকাই আলী প্রামাণিক (২৫)। গ্রেপ্তারের পর তাদের হেফাজত থেকে লুটের স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে গত ২০ এবং ২১ জুন ঐ দুই লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাদের পরিচয় অজ্ঞাত ছিল।
পুলিশ সুপার জানান গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেন। একই সাথে ঐ দুই ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার পর বালু চাপা দিয়ে রাখার কথাও স্বীকার করে।
গ্রেপ্তারকৃত ৫ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খোকসার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এক সন্ত্রাসীর রাজত্ব চলছে এখন। চুরি, ডাকাতি, খুনের উৎসবে মেতেছে এই সন্ত্রাসী। স¤প্রতি অস্ত্রসহ ধরা পড়লেও উপজেলার এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের তদবিরে জেল থেকে বেড়িয়ে আসে সে। গত ইউনিয়ন পরিদ নির্বাচনে ঐ সন্ত্রাসী ঐ চেয়ারম্যানের পক্ষে জনগনকে ভোট দিতে ভয়ভীতি দেখায়। অনেকে জানান ঐ চেয়ারম্যানই ঐ সন্ত্রাসীটিকে অস্ত্র কিনে দিয়েছিল। পারিবারিকভাবে ঐ চেয়ারম্যান বিএনপি পন্থী ও তার পিতা রাজাকারদের সহযোগী হলেও একজন সংসদ সদস্যের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগ সেজে বসে আছে।
পুলিশ সুপার জানান, সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই। তবে ছত্রছায়া আছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন কোন ছাড় দেয়া হবে না।
Leave a Reply