February 5, 2025, 3:42 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বন্য প্রাণী বেচাকেনা চলে এবং সেখান থেকে পাচার হয় বিদেশে কুষ্টিয়াসহ দেশের ১৩টি জেলা চিন্থিত করা হয়েছে। এসব জেলাগুলোতে এসব কাজে লিপ্ত রয়েছে বন্য প্রাণী শিকারীরাদের একটি অংশ একই সাথে জড়িত রয়েছে বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করেন এমন একটি অংশ। এসব জেলা থেকে বন্য প্রাণী ধরে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আনা হয়। ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে ও চট্টগ্রাম সমুদ্রপথে প্রাণী পাচার করা হয় মোটা টাকার বিনিময়ে।
জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, রাঙামাটি, কক্সবাজার, বান্দরবান ও গাজীপুর।
পাচার হওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার। এরপর থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও লাওসে প্রাণী পাচার করা হচ্ছে।
এ নিয়ে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি গবেষণা হয় গবেষণা প্রতিবেদনটি গত বছরের ২৫ নভেম্বর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, বন থেকে ধরে আনা জ্যান্ত প্রাণী দেশের ভেতরে কেনাবেচা ও বিদেশে পাচার হচ্ছে। আবার মৃত প্রাণীদের মাংস, হাড়, দাঁত, নখ, চামড়া থেকে শুরু করে রক্ত পর্যন্ত বাজারে বিক্রি হচ্ছে। যে প্রাণী যত দুর্লভ ও বিপন্ন, সেই প্রাণী তত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মহাবিপন্ন প্রজাতির বেঙ্গল টাইগার, মুখপোড়া হনুমান, লজ্জাবতী বানর, বিষধর সাপ, তক্ষক ও ছোট
গবেষণাটি গবেষক মো. নাসিরউদ্দিনের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
গবেষক দল বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং প্রমাণ পেয়েছেন যে ওই বছর মোট ৯২৮টি বন্য প্রাণী বেচাকেনা হয়েছে। গবেষক দলটি বন্য প্রাণী বেচাকেনার সঙ্গে যুক্ত মোট ৪২৩ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছেন। এই ব্যক্তিদের পরিচয় গোপন রেখে তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ওই ব্যক্তিরা বন্য প্রাণী পাচার ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, সাধারণত বনের আশপাশের এলাকাগুলোতে বন্য প্রাণী বিক্রির প্রকাশ্য ও গোপন দুই ধরনের বাজার গড়ে উঠেছে। সেখানে আগাম দরদাম করে তারপর পাচারকারী বন থেকে প্রাণীগুলো ধরে এনে বিক্রি করেন। সাধারণত মৃত প্রাণীর অঙ্গের তুলনায় জীবন্ত প্রাণী বেশি দামে বিক্রি হয়।
বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন একটি শক্তিশালী চক্র সম্প্রতি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত এক বছরে ৩ হাজার ১১টি পাখি, ১১২টি সাপ ও ৭৪৭ টি অন্যান্য প্রাণী পাচারের সময় উদ্ধার করেছে বন অধিদপ্তর।’
গবেষণাটিতে বলা হয়, বিশ্বে অবৈধ পণ্যের বাজারের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বন্য প্রাণী। বছরে ৩২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বন্য প্রাণী কেনাবেচা হয়, যার বড় অংশ ধনীদের শৌখিন চিড়িয়াখানা ও পার্কে আটকে রাখার জন্য কেনা হয়। এ ছাড়া চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বন্য প্রাণীর শরীরের বিভিন্ন অংশ খাবার ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বাইরে ব্যাগ, বেল্ট, গৃহশয্যা ও উপহারের সামগ্রী এবং গয়না তৈরিতে বন্য প্রাণীর চামড়া, দাঁত ও নখের বিপুল ব্যবহার আছে।
গবেষণা প্রতিবেদন আরও বলছে, দেশের ভেতরেও বন্য প্রাণীর অবৈধ বাজার গড়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, হাট ও বাজারে বনরুই, বেজি, সাপসহ নানা ধরনের প্রাণীর তেল, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়। ক্রেতাদের বড় অংশ এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ওষুধ হিসেবে কার্যকর মনে করে।
Leave a Reply