December 22, 2024, 2:36 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কাতার বিশ্বকাপে ৯৭৪ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় পোল্যান্ডের মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচে ২-০ গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়েছে দলটি। হলো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। এখন শেষ ষোলতে মেসিরা। গ্রুপসেরা হওয়ায় দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সকে এড়িয়েছে আর্জেন্টিনা। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে মেসিদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।
মাঠে তখন লিওনেল মেসি, ডি মারিয়া, অ্যাকুনা, ফার্নান্দেজ, আলভারেজদের আক্রমণের ঢেউ সামলাতে ব্যস্ত পোলিশ ডিফেন্স লাইন। দর্শকরা তখন ‘ভামোস আর্জেন্টিনা! ভামোস মেসি! এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা। এগিয়ে চলো মেসি। ও মেসি, একটা গোল করো’- গ্যালারির প্রায় ৩৫ হাজার আর্জেন্টাইন সমর্থক একই সুরে, বিরতিহীনভাবে গাইলেন একই গান। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে তারা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে তৈরি করলেন নীল সমুদ্রের ঢেউ।
স্মরণে সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচে পরাজয়ের দুর্ঘটনার কথা। খেলতেই হয়েছে তাই।
প্রতিমুহুর্তেই পোলিশ ডিফেন্সের ফাঁকফোকর খুঁজে বেড়াতে হয়েছে। ছিল পোলিশ রক্ষণব্যূহের দুর্বলতা বের করার চেষ্টা। কিন্তু এতকিছুর পরও প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনাকে আটকে রাখে পোল্যান্ড। ভিএআর দেখে এসে পেনাল্টি দেন রেফারি। ৩৯ মিনিটে মেসির দুর্বল শটের পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন পোলিশ গোলরক্ষক সেজনি। এরও আগে ২৮ মিনিটে অ্যাকুনা সুযোগ হারান। ডি মারিয়াও ওপেন-নেট গোল মিস করেন। প্রথমার্ধটা আর্জেন্টিনা দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েও গোল আদায় করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই ম্যাচের প্রথম গোলটা করে নিল আর্জেন্টিনা। ডিফেন্ডার মলিনার ছোট পাসে বল পেয়ে ডি বক্সের লাইন থেকে মাটি কামড়ানো শটে পোলিশ ডিফেন্ডার গোলরক্ষকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান ম্যাক অ্যালিস্টার (৪৬ মিনিট)। ৬৭ মিনিটে ফার্নান্দেজের পাসে বল পেয়ে ডি বক্সের ভিতর থেকে জোরালো শটে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলভারেজ।
গতকাল ১২টারও বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনা! প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২১ বারেরও বেশিবার আক্রমণে যায়। লিওনেল মেসি গতকাল গোল করতে পারেননি। তবে দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করেছেন। গোল মিস করেছেন কয়েকটা। তারপরও মেসির খেলায় ছিল জাদু।
মেসি নির্ঘন্ট/
গতকাল গোল মিসের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিলেন স্বয়ং মেসিও। সবচেয়ে বাজে মিসটি যে তিনিই করেন। ম্যাচের প্রথমার্ধেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। অসাধারণ দক্ষতায় মেসিকে ঠেকিয়ে দিয়ে যেন শাপমোচন করেছেন পোল্যান্ডের গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। তার কারণেই যে পেনাল্টি পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। বল সেভ করার সময় মেসির চোখে আঘাত করেছিলেন তিনি। প্রথমে মাঠের রেফারির চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল বিষয়টি। কিন্তু মেসিকে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে সতীর্থরা রেফারির কাছে আবেদন করেন। বাধ্য হয়ে রেফারি প্রযুক্তির (ভিএআর) সাহায্য নেন এবং পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সেজনির যেখানে খলনায়ক হওয়ার কথা সেখানে পেনাল্টি আটকে দিয়ে নায়ক বনে যান।
এই ম্যাচে হারলে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে যেত আর্জেন্টিনার। সেই সঙ্গে ট্র্যাজিক হিরো হয়ে যেতেন লিওনেল মেসি।ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই পেনাল্টি মিসের বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন মেসি। জবাবে তিনি বলেন, ‘পেনাল্টিটা মিস করে আমার খুবই রাগ হচ্ছিল।’
মেসির সেই মিসের পর আর্জেন্টিনাকে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেয়ে যায় দলটি। এরপর সময় যত গড়িয়েছে দলের পারফর্ম্যান্স যেন পাল্লা দিয়ে তত বেড়েছে।
এমন পারফর্ম্যান্স প্রসঙ্গে মেসি বলেন, ‘আমার ভুলের পর এই দলটা দারুণ শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছিল। কারণ, আমরা জানতাম, প্রথম গোলটা পেলেই পুরোপুরি বদলে যাবে ম্যাচটা।’
Leave a Reply