December 22, 2024, 6:18 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আপন ছোট ভাইয়ের ছেলের হাতেই খুন হয়েছেন কুষ্টিয়ার স্কুল শিক্ষক রোকসানা খানম। পুলিশ এ ঘটনায় সোমবার রাতে রোকসানার ছোট ভাই মরহুম ইমরানুল হকের ছেলে নওরোজ কবির নিশাত (১৯) কে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে রোকসানার স্বামী বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল পুলিশ স্টেশনে নিশাতকে প্রধান আসামী ও অজ্ঞাত আরো তিন আসামীর নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নিশাতকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশাত হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, অনলাইন বেটিং জুয়া খেলায় বাধা দেয়ায় তিনি রোকসানাকে ঘুমের মধ্যে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছেন।
রোকসানা খানম কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষিকা। তার লাশ সোমবার তার নিজ বাসভবন থেকে উদ্ধার করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায় নিশাতের বাবা মারা যাওয়ার পর নিশাত তার মা ও এক বোনসহ ফুফু রোকসানার বাসাতেই থাকতেন এবং রোকসানাই নিশাতকে নিজ দায়িত্বে প্রতিপালন করে আসছিলেন। রোকসানা কিছুদিন আগে ভাতিজা নিশাতকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুল্যের একটি মটরসাইকেল কিনে দেন।
ওসি জানান নিশাত ছিলেন মাদকাসক্ত ও জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। ওসি আরও বলেন জুয়া খেলায় হেওে রোকসানার দেয়া সেই মটরসাইকেলটি বিক্রি করে দেন নিশাত। এাঁ নিয়ে রোকসানা নিশাতকে বকাঝকা করেন। ওসি জানান এরপরও নিশাত রোকসানার কাছে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ দাবি করতে থাকে। রোকসানা সেই অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে নিশাত ক্ষুব্দ হয়ে উঠে।
সোমবার দিনেও নিশাতের সাথে রোকসানার কথাকাটাকাটি হয়।
ওসি নাসির জানান এরপর নিশাত রোকসানাকে হত্যার সিদ্বান্ত নেন।
রোববার সন্ধ্যায় রোকসানা বাড়ির ছাদে উঠলে সেই সুযোগে একটি রুমে ঢুকে আত্মগোপন করেন নিশাত। রোকসানা ঘুমিয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে নিশাত একটি শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করেন।
নিশাত পুলিশকে আরও জানান, হত্যার পর তিনি রোকসানার মোবাইল ফোন থেকে নিজের মোবাইলে কয়েকটি মেসেজ পাঠান। সেখানে সকালে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। এগুলো পুলিশকে দেখিয়ে তিনি প্রথমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
ওসি জানান যখন রক্তাক্ত অবস্থায় রোকসানা মাটিতে লুটিয়ে পরে তখন নিশাত ঘটনাকে ভিন্ন দিকে মোড় দেবার জন্য ঘরবাড়ি এলোমেলো করে দেন। হত্যার পর নিশাত বাসার বারান্দার ওপরের ডিজাইন করা গোল ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে যান।
হত্যায় ব্যবহৃত শিলটি লিফট ঘর থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে।
রোকসানা নিঃসন্তান হওয়ায় তার ছোট ভাইয়ের ছেলে নিশাতকে ২য় শ্রেনী থেকে নিজের কাছে রেখে নিজের সন্তানের মত লালন পালন করে আসছিলেন।
ডিবি পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন জানান, রোকসানা হত্যার ঘটনায় পরিবারের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এর মধ্যে নিশাতের মোবাইল পরীক্ষা করে সন্দেহ প্রবল হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম জানান, নিহতের স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিশাতকে আদালতে নেয়ার প্রস্তৃতি নেয়া হচ্ছে।
Leave a Reply