December 22, 2024, 4:38 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কুষ্টিয়ার সাংবাদিকেরা। এ সময় সমাবেশ থকে নিখোঁজের ৫ দিন পর্যন্ত একজন সাংবাদিককে উদ্ধার করতে না পারাকে পুলিশের ব্যর্থতা বলে অভিহিত করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দেয়া হয়।
আজ শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকেরা কুষ্টিয়ার ব্যস্ততম মজমপুর গেট বন্ধ করে দিয়ে এই সমাবেশ করে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় পৌর কবরস্থানে জানাজা শেষে হাসিবুরের লাশ দাফন করা হয়।
দাফন শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসিবুর হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে কবরস্থান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাংবাদিকেরা। মিছিলটি কলেজ মোড় হয়ে মজমপুর ট্রাফিক কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরে কুষ্টিয়া–ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া–ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন সাংবাদিকরা। অবরোধে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, এডিটরস ফোরাম, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ক্যামেরা পার্সনদের সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু, সাংবাদিক নেতা মজিবুল শেখ, সোহেল রানা, হাসান আলী, শরীফ বিশ্বাস প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশের একপর্যায়ে সাংবাদিকেরা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের প্রত্যাহার দাবি করেন।
অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে অন্তত এক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি সাংবাদিকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তিনি আশ্বাস দেন যেকোনো সময় জড়িত ব্যক্তিদের ধরা হবে।
রুবেলের অফিস ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে অবস্থিত দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার অফিসে কাজ করছিলেন রুবেল। এসময় তার মোবাইলে একটি কল এলে তিনি অফিস পিয়নকে বাইরে থেকে আসছি বলে বের হয়ে যান। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যেতে থাকে।
পুলিশকে লিখিত দেয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছিল রুবেলের অনুসন্ধানে কাজ করছে তারা।
এদিকে ঐ সাংবাদিকের খোঁজ পেতে বুধবার কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
নিখোঁজ সাংবাদিক রুবেলের স্ত্রী ইতি খাতুন জানান নিখোঁজের দিন রুবেল সারাদিনই বাইরে ছিলেন। বিকেলে তার সাথে ইতির একবার কথা হয়। তখন রুবেল তাকে জানান রাতে বাসায় ফিরবেন।
রুবেলর পরিার থেকে কুষ্টিয়া পুলিশের গাফিলতিতে রুবেল লাশ হয়েছে বলে আগেই দাবি করা হয়।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান ঘটনাটি মর্মান্তিক। পুলিশও এ ঘটনায় মর্মাহত। কিন্তু এ ঘটনাটি একেবারেই ক্লু-লেস। যার কারনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে ঘটনার পেছনের দিকটা উদঘাটন করতে হচ্ছে।
তিনি জানান পুলিশ হত্যাকারীদের প্রায় কাছে চলে এসেছে। হত্যাকারীরা লোকেশন পরিবর্তন করে চলেছে। তারপরও যে কোন মুহুর্তে তারা ধরা পড়বে বলে জানান পুলিশ সুপার।
হাসিবুর কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, তিনি একটি অনলাইন পোর্টাল চালাতেন ও দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন।
Leave a Reply