December 22, 2024, 4:11 pm
একটি দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদন/
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। পঞ্চাশ পেরিয়ে বাংলাদেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের সকল সূচকেই এগিয়ে চলা বাংলাদেশ স্বাধীনতার আজ ৫০বছর পূর্ণ করেছে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালে এই দিনেই বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশকে দখলদারমুক্ত করার সংগ্রামে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
পাকিস্তানি ঘাতক সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে যখন রাজধানীতে এক নৃশংস গণহত্যায় মেতে ওঠে, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসায় গ্রেফতার হওয়ার আগমুহূর্তে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে একটি বার্তা পাঠান। বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। একে যে রকম করেই হোক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’
এরপর অঅসে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান, দুই লাখ মা-বোনের ত্যাগ এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। বিজয়ের পরে পাকিস্তানী কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরার পরে বঙ্গবন্ধু দেশ পুনর্গঠনের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধু তার প্রতিটা বক্তৃতায় সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্বের কথা জানান।
বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন; কিন্তু দেশের শত্রুরা তাকে হত্যা করে দেশকে নরকে পরিণত করেছিল। দীর্ঘদিন সামরিক শাসন,মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শাসন থেকে বেরিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে দেশের উন্নয়ন প্রকল্প একের পর এক বাংলাদেশকে দাঁড় করাচ্ছে বিশ্ব দরবারে, মাথা উঁচু করে। এখন উদাহরণ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু, চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, গ্যাস সংকট নিরসনে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রাজধানীর চারপাশে স্যুয়ারেজ টানেল নির্মাণের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়নের এ কর্মযজ্ঞে যোগ হয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম প্রকল্প। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি অঞ্চলের কাজের উদ্বোধনও করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ‘মুজিববর্ষ’ ও ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’ উদযাপনে বাঙালির জাতীয় জীবনে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ই মার্চ থেকে মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে দশ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের এই সন্ধিক্ষণে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হোক– মহান স্বাধীনতা দিবসে এ আমার প্রত্যাশা।
এদিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুবর্ণজয়ন্তীর এই শুভক্ষণে আমাদের শপথ নিতে হবে, কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। দেশের গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে। আসুন, সকল ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি।
Leave a Reply