December 22, 2024, 7:07 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে ভারত থেকে আনা ৪৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার, আটক ৫ চুয়াডাঙ্গায় জামায়াত আমির/কোনো বিভক্তি নয়, ঐক্যই হোক এ জাতির সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি আ.লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না: হানিফের বিৃবতি পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দি ৪০ গ্রাম, নিম্নাঞ্চলে মৌসুমী ডাল ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা ১২০০ টাকা কেজি দরে প্রথম চালানে ভারতে গেল ১২ টন ইলিশ, ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির জন্য ২ সদস্যর আহ্বায়ক কমিটি, বিলুপ্ত মিরপুর উপজেলা কমিটি/ যা বললেন জাকির সরকার জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের রোহিঙ্গা সংকট অবহিত করলেন ড. ইউনূস, সমাধানে ৩ প্রস্তাব ইবিতে নব নিযুক্ত উপাচার্য/ শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলাই তার স্বপ্ন আট ঘন্টার ব্যবধানে মাগুরা ও ঝিনাইদহে সড়কে নিহত ৫ নিউইয়র্কে তৌহিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক/বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি

৫০ বছর পর/একবারও রিভিউ হয়নি ফারাক্কা বাঁধ ইস্যু

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/

নির্মাণের ৫০ বছর হতে চলেলও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফারাক্কা বাঁধ রিভিউ হয়নি একবারও। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী প্রতি ৪০ বছর পর নদীতে দেয়া বাঁধ রিভিউ করতে হয়। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধ রিভিউর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফারাক্কা বাঁধ নদীর স্বাভাবিক গতিপথ রোধকারী একটি বাঁধ। পরিকল্পিতভাবে এটি অন্য একটি দেশকে অব্যাহতভাবে ক্ষতি করে চলছে। সুতরাং বাঁধটি নিয়ে অনেক আগেই জোরালোভাবে ভাববার অবকাশ ছিল। বিকল্প চিন্তার দরকার ছিল। কিন্তু কোনটিই হয়নি। যার কারনে দেশে এত দীর্ঘ ধরনের ক্ষতি হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত এই বাঁধটি অবস্থিত। ১৯৬১ সালে শুরু হয়ে ১৯৭৫ সালে শেষ হয়। ২,২৪০ মিটার (৭,৩৫০ ফু) লম্বা বাঁধটি এক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সোভিয়েত রাশিয়ার সহায়তায় বানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তের ১৬.৫ কিলোমিটার উজানে গঙ্গা নদীতে এ বাধ নির্মান করা হয়। কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধির অজুহাতে ভারত ১৯৫৬ সালে এই প্রকল্প হাতে নেয়।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে গঙ্গা প্রশ্নে আলোচনা শুরু হয়। ১৯৭২ সালে গঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন। ১৯৭৫ সালে ভারত বাংলাদেশকে জানায় যে, ফারাক্কা বাঁধের ফিডার ক্যানাল পরীক্ষা করা তাদের প্রয়োজন। সে সময় ভারত ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১০ দিন ফারাক্কা থেকে ৩১০-৪৫০ কিউবিক মিটার/সেকেন্ড গঙ্গার প্রবাহ প্রত্যাহার করার ব্যাপারে বাংলাদেশের অনুমতি প্রার্থনা করে। বাংলাদেশ সরল বিশ্বাসে এতে সম্মতি জ্ঞাপন করে। ভারত বাঁধ চালু করে দেয় এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও একতরফাভাবে গঙ্গার গতি পরিবর্তন করতে থাকে যা ১৯৭৬ সালের পুরা শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
ভারতকে এ কাজ থেকে বিরত করতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়। ১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি সর্বসম্মত বিবৃতি গৃহীত হয় যাতে অন্যান্যের মধ্যে ভারতকে সমস্যার একটি ন্যায্য ও দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেয়া হয়। পরিশেষে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন সংক্রান্ত ৩০ বছরের একটি চুক্তিতে উপনীত হতে সক্ষম হয়।
শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানি অপসারণের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ বাধ চালুর পর দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে ফলে বর্ষা কালে এ দেশের উত্তরাঞ্চলে তিব্র বন্যা দেখা দিচ্ছে। এতে বাংলাদেশকে কৃষি, মৎস্য, বনজ, শিল্প, নৌ পরিবহন, পানি সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশে পানি উন্নয়ন: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারাও ফারাক্কা রিভিউ এর জোর দিয়েছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক ড. এস নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফুড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএস সভাপতি ড. বিনায়ক সেন।
ড. এস নজরুল ইসলাম বলেন, নদী নিয়ে কিছু সময় কাজ করলে হবে না। এটি নিয়ে লম্বা সময় ধরে বিশদ কাজ করতে হবে। মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। হুটহাট প্রকল্প নিলে দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে। ডেল্টা প্ল্যানের কিছু অংশ সংশোধন করা প্রয়োজন। ফারাক্কা বাঁধের বয়স প্রায় ৫০ বছর হতে চলল। এটি আবার রিভিউ করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ৪০ বছরেই এটি রিভিউ করার কথা। কিন্তু এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এদিকে বোরো আমাদের প্রধান ফসল, আমনের মৌসুম এখন পাল্টে গেছে, এটি নিয়ে এখন ভাবতে হবে। আমাদের প্রকৃতির বিষয়ে ভাবতে হবে। নদীর পানি দূর থেকে না এনে স্থানীয় পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

ড. শামসুল আলম বলেন, নদীকে তার পথে চলতে দিতে হবে। বাধা সৃষ্টি করলে হবে না। দেশের প্রতিটি নদী ড্রেজিং করতে হবে। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যারা ১০০ বছরের পরিকল্পনা করেছে। ফারাক্কা বাঁধ ভারতের বিষয়। সেখানে আমরা কথা বলতে পারি না। ডেল্টা প্ল্যানে বিগত পানি ব্যবস্থাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি, এটা ঠিক নয়। সেখানে সামাজিক অবস্থা, পানি ব্যবস্থা ও অন্য অনেক বিষয় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর কথার সমালোচনা করে ড. এস নজরুল ইসলাম বলেন, গঙ্গা নদী ভারতের ভেতর দিয়ে গেছে। এজন্য আমরা কথা বলতে পারব না? আন্তর্জাতিক নদী নিয়ে আমরা কথা বলব না? এ বাঁধে তো আমাদের ক্ষতি হচ্ছে, দেশের মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের ক্ষতি নিয়ে আমরা কথা বলব না কেন? নদীর সঙ্গে মানুষের ভাগ্য জড়িত, নদী আর মানুষ একে অন্যের সঙ্গে জড়িত। নদীকে হেলায় ফেলায় রাখার সুযোগ নেই। নদী না থাকলে মানুষ থাকবে না।
ড. শামসুল আলম বলেন, অর্থনীতিবিদরা ডেল্টা প্ল্যানে মতামত দিয়েছেন। তারা দেশে-বিদেশে কাজ করেছেন। ডাচ অ্যাম্বাসিকে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা প্রজেক্ট বাতিল করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের ড্রাফটটি মূল্যায়ন করিনি। এ নিয়ে অনেক মান-অভিমানের সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ তারা তাদের দেশের আলোকে এখানে প্ল্যান দিয়েছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা আর তাদের সমস্যা তো এক নয়। তাদের ওইসব পরিকল্পনায় বাণিজ্যিক বিষয়াদি রয়েছে। আমাদের সে বিষয়ও মাথায় রাখতে হয়। এখানে প্রতি বছর ৫৫ হাজার মানুষ নদীভাঙনে গৃহহীন হচ্ছেন। এ সমস্যা আমাদের আহত করে। আগামীতে ডেল্টা প্ল্যানেই আমাদের যেতে হবে। কারণ আমরা এখানে নদীকে তার গতিতে থাকতে দিয়েছি। কিন্তু প্রয়োজন হলে এটি সংশোধন করা হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান বলেন, পাকিস্তান আমলে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল বন্যা। তখন এটি নিয়ন্ত্রণই ছিল অন্যতম কাজ। কারণ প্রতি বছরই বন্যার কবলে পড়তে হতো। এখনো সেই নদীকেন্দ্রিক সমস্যা থেকে গেছে। বিষয়টি আরো গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক সাজিদ কামাল, ড. জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel