December 23, 2024, 6:35 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে বিচার কাজ পরিচালনার প্রথম দিনে গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া আদালতে ৬২ মামলার শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৪৭ টিতে জামিন মঞ্জুর করে আদালত। আজও যখারীতি আদালত চলবে বলে জানা গেছে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিরতিহীন বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ অরূপ কুমার গোস্বামী এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এর আদালতে এসব মামলার জামিন শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
কুষ্টিয়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী ৪১ টি মামলার মধ্যে ৩৯টি মামলা শুনানী করেন। ৩৩টি মামলায় ৫৫জনকে জামিন দেন এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম ২১ টি মামলার ভিতর ১৬ টি শুনানী করেন এবং ১৪টি মামলায় জামিন দেন।
চলমান কোভিড-১৯ সংক্রমণের ফলে আদালত গুলোতেও একই সাথে বিচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মামলার জটসহ নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। এ নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগ বিকল্প চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করে। বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী আদালতে মামলার পক্ষরা বা তাদের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীদের সশরীরে উপস্থিতি থেকে মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে বিচার কাজ পরিচালনা করা সংক্রান্ত আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০ জারি করে সরকার। ০৯ মে রাতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০৭ মে) গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অধ্যাদেশ অনুমোদন দেয়া হয়।
কুষ্টিয়ায় প্রথমদিনে পক্ষগণ ও আইনজীবীদের বৃহৎ অংশ উপস্থিত ছিলেন। এর আগেই ভার্চুয়াল জামিন শুনানীর সরকারি নির্দেশনা জারীর পর থেকে জেলা জজশীপ ও আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কয়েকদফা বৈঠকে কার্যপদ্ধতি ঠিক করা হয়।
কুষ্টিয়ার আইনজীবীরা বিষয়টিকে স্বাগত জানান। উদ্যোগটির প্রশংসা করেন। বিচার প্রত্যাশিরাও এটিকে স্বাগত জানান।
তবে প্রথম দিনে বেশকিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী ভার্চ্যুয়ালি শুনানি করা গেলেও আবেদন দাখিলের প্রক্রিয়া পুরোপুরি ভার্চ্যুয়াল হয়নি। আবেদন করতে গেলে বেশকিছু বিষয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হচ্ছে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে গিয়ে পুরো পদ্ধতি আর ভার্চ্যুয়াল থাকছে না। বিশেষ করে ওকালতনামা, বেইল বন্ড ও কোর্ট ফি সংগ্রহ করতে হচ্ছে আগের নিয়মেই। আদালতে আইনজীবী সমিতির নির্দিষ্ট বুথ থেকে সংগ্রহ করতে হয় ওকালতনামা ও বেইল বন্ড। তাই জামিন আবেদন করতে ওকালতনামা সংগ্রহ ও হাজত থেকে তা স্বাক্ষর করিয়ে আনতে আদালতে যেতেই হচ্ছে। কোর্ট ফির জন্যও দ্বারস্থ হতে হচ্ছে নির্দিষ্ট কাউন্টারের।
অনেক আইনজীবী কম্পিউটার ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। তাই জামিনের আবেদন করতে নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে কম্পোজ করাতে হচ্ছে। তাই ভার্চ্যুয়াল কোর্ট নামে থাকলেও পুরো জামিন আবেদনের প্রস্ততিতে তা আর ভার্চ্যুয়াল থাকছে না। শুধু শুনানির ক্ষেত্রেই ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া আদালতের অনেক আইনজীবী জানান উদ্যোগ ভালো। তবে এখনই সফলতা পাওয়া যাবে না। কারণ ব্যক্তিগতভাবে অনেক আইনজীবী, বিশেষ করে নিম্ন আদালতে যারা প্র্যাকটিস করেন, তারা প্রযুক্তির সঙ্গে সেভাবে অভ্যস্ত না। তবে এই ব্যবস্থা চালু থাকলে একটু সময় গেলে হয়তো কিছুটা সফলতা আসতে পারে।’
তবে এই ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা সমাধানের দাবি এই আইনজীবীর। তারা বলেন আবেদন সাবমিট করার পর তা গৃহীত হয়েছে কিনা তার জন্য ইমেইলের জবাবের অপেক্ষায় থাকতে হয়। এটি স্বয়ংক্রিয় হলে ভালো হতো। তাছাড়া ওকালতনামা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ভার্চ্যুয়াল ব্যবস্থা না থাকায় এই পদ্ধতি কিছুটা অসুবিধায় পড়েছে। জেল কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ওকালতনামা সংগ্রহ করার পদ্ধতি থাকলে অধিকতর সুবিধা হত।
তবে অনেক আইনজীবী বরেছেন বিষয়টি নিয়ে ভাল কোন ওর্য়্যকশপ টাইপের কিছূ আগে থেকে হকে পারত।
Leave a Reply