December 22, 2024, 6:56 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আওয়ামীলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১২, কুষ্টিয়া।
র্যাব জানায় গ্রেফতার ৫ জনই মামলার আসামী। গ্রেফতারদের কাছ থেকে দুটি দেশী তৈরি অস্ত্র ও ৪টি গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায় বুধবার রাতে ভেড়ামারার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সোনা মালিথার ছেলে মিন্টু মালিথা, চাঁদপুর গ্রামের নজরুল মালিথার ছেলে রনি মালিথা, আব্দুল হামিদ ওরফে কটার ছেলে জনি ও ড্যানি, মৃত জফো প্রামানিকের ছেলে জারমান প্রামানিক।
র্যাব জানায় পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথার দেখানো জায়গা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় গ্রেফতার মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক হত্যাকান্ডে তাদের জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছে। স্থানীয় জনগণ অনেকেই গ্রেফতারকৃত মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথাকে সরাসরি হত্যা কান্ডে অংশগ্রহন করতে দেখেছে এবং বাকি ৩ জন তাদেরকে হত্যা কান্ডে অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেছে বলে র্যাব জেনেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব বলছে দীর্ঘদিন যাবত বিরাজমান বংশগত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মালিথা বংশের লোকজন কর্তৃক তিনি নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন।
শুক্রবার সকালে চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক (৫০)কে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় সিদ্দিকীর ছোট তিন ভাই ও ছেলেও গুলিবিদ্ধ হন। সকাল ৯টার দিকে চরপাড়া মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে সিদ্দিক মাঠে কাজ করছিলেন। হঠাৎ সেখানে ৪/৫ জনের একটি দল অস্ত্র হাতে হাজির হয়ে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। এতে সিদ্দিকী, তার ছেলে ও তিন ভাই গুলিবিদ্ধ হন। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ভেড়াামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিদ্দিককে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা হত্যাকান্ডের জন্য স্থানীয় জাসদকে দায়ী করতে থাকেন।
শনিবার রাতে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম স্বপন ও তার ছোট ভাই চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাফিজ তপনও দলের ভেড়াামারা উপজেলার ২০ নেতা কর্মীকে আসামী করে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই এনামুল হক।
এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঐ এলাকার রাজনীতি। ঐ এলাকাতেই বাড়ি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুল উল আলম হানিফ ও জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জোট সরকারের সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর। ইনু ২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে কুষ্টিয়া-২ আসনে (ভেড়াামারা-মিরপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
এ ঘটনায় বিবৃতি দেন জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার। তারা এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেন। এদিকে এ বিবৃতির পর ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে পুনরায় এ হত্যাকান্ডের জন্য জাসদকেই দায়ী করে।
একাধিক সূত্র জানায় জোটের শরিক হলেও এই জেলায় দুটি দলের মধ্যে ব্যাপক বৈরি সম্পর্ক। প্রায় উভয় দলের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে থাকেন। গত ১২ বছরে ঐ দুই উপজেলায় দুই দলের মধ্যে প্রায় ২০-২২টি সংঘর্ষে আওয়মী লীগের তিন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
Leave a Reply