December 22, 2024, 10:47 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ বুধবার সকালে কবর থেকে উত্তোলন করার পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামের একটি কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
মরদেহ কবর তুলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ আশরাফুল ইসলাম জানান মরদেহের বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের কমিটির লিখিত আকারে মতামত দেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন ফরেনসি ডিপাটর্মেন্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। কারণ ভালো রিপোর্ট পাওয়ার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদারের পাঠানো চিঠি হাতে পান কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক। কিন্তু রাতে লাশ উত্তোলন সম্ভব না হওয়ায় সকালে লাশ উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইমলাম।
তিনি জানান লাশ উত্তোলনের দায়িত্বে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
এর আগে ৫ ডিসেম্বর কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিচুর রহমান বিশ^বিদ্যালয় পক্ষ থেকে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করে মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানের জন্য লাশ উত্তোলন করে পূণ তদন্তের জন্য অনুরোধ করে জেলা পুলিশকে একটি পত্র দেন। পরবর্তীতে খুলনার খানজাহান আলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহরিয়ার হাসান লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয়।
লাশ উত্তোলনের দায়িত্বে নিয়োজিত কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত জানান মরদেহ উত্তোলন করে খানজাহান আলী থানার পুলিশের একটি টিমের কাছে হস্তান্তর করে হয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক (ইইই) ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেন (৩৮) ক্যাম্পাসের পাশের ভাড়া বাসায় মারা যান। তিনি একতই সাথে ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। ১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়।
সন্দেহ করা হয় বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তার কক্ষে নিয়ে গিয়ে তার ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মানসিক নিপীড়নের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
কিন্তু এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে খান জাহান আলী থানায়। কোন মামলা হয়নি।
মামলার বিষয়ে ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন জানান তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। তিনি চান কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করুক এবং তিনি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে সেটি জানিয়েছেন। তিনি বলেন বিশ^বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের এভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো বিশ^বিদ্যালয় কতৃপক্ষের কোন দায় থাকবে না ?
লাশ উত্তোলনের সময় ড. সেলিমের পিতা শুকুর আলী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি বলেন একটি মৃত্যুর ঘটনায় কিভাবে বিশ^বিদ্যালয় কতৃপক্ষ কোন রকম ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিল। তিনি মনে করেন তার ছেলেকে কোন না কোনভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। তিনি এর সঠিক তদন্ত চেয়েছেন।
Leave a Reply