December 24, 2024, 10:38 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় চুরির অভিযোগে এক তরুণকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য উসমান কাজীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণের নাম রাসেল শেখ (১৯)। তিনি উপজেলার দক্ষিণ দৌলতদিয়া সৈদালপাড়ার বাসিন্দা।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯- এ ফোন পেয়ে তাকে তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ।
আসামি উসমান কাজী দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। রাসেলের খালা শুকুরজানের করা মামলায় উসমান কাজী ও তার ২ ভাইসহ নাম উল্লেখ করে ৫ জনকে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রাসেলকে উদ্ধারের সময় পুলিশ উসমানের ছোট ভাই মুকবুল কাজীকে গ্রেপ্তার করেছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুলাহ আল তায়াবীর এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ”উসমান কাজীর বাড়িতে গিয়ে মুকবুল কাজীকে আটক করা হয়। পরে তার কাছে থেকে তালাবদ্ধ ঘরের চাবি নিয়ে রাসেলকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বিকেলে মুকবুল কাজী আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি একই গ্রামের সোনামুদ্দিন ফকিরের অটোরিকশা চুরি হয়। এ ঘটনায় তিনি রাসেলকে সন্দেহ করেন। এ নিয়ে গত ২০ নভেম্বর দুপুরে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সালিশ বসে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ প্রামাণিকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। রাসেল ভয়ে চুরির সঙ্গে তার মামা মঞ্জু ফকিরসহ খালাতো ভাইদের জড়িত থাকার কথা বলেন। বৈঠকে তার মামা অচেতন হয়ে পড়লে ২৭ নভেম্বর পুনরায় সালিশের দিন নির্ধারণ করা হয়। এর আগ পর্যন্ত রাসেলকে ইউপি সদস্য উসমান কাজীর নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত দেন চেয়ারম্যান। এরপর থেকে উসমান কাজীর বাড়ির একটি ঘরে রাসেলকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। উসমানের ২ ভাই মুকবুল, আসাদ কাজীসহ অন্যরা তাকে পাহারা দিতেন।
রাসেল বলেন, ‘আমি কারো একটি টাকাও মেরে খাইনি। এরপরও আমাকে অমানবিক নির্যাতন করেছে। খাবার চাইলে তারা হাত-পা বেঁধে পেটাত।’
নির্যাতনের ব্যাপারে জানার জন্য উসমান কাজির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানান, ‘গত ২০ নভেম্বর সালিশে রাসেল চুরিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তার সহযোগীদের নাম বলেন। আজ ২৭ নভেম্বর পুনরায় সালিশের দিন ধার্য করা হয়।’
রাসেলকে আটকে রাখার কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে আটকে রাখার নির্দেশ দিইনি। এ কয়েক দিন রাসেলকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছিল, তা আমার জানা নেই।’
Leave a Reply