December 22, 2024, 12:47 pm
ড. আমানুর আমান, সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর
—————————
দৈনিক কুষ্টিয়া’র অভিযাত্রায় যোগ হলো আরেকটি বছর। ত্রিশ বছরে এখন আমরা। অনেক কষ্টার্জিত এ পর্দাপণ। কারন আমাদের জন্য সহজ হচ্ছে না এই অভিযাত্রা ; তাই জন্যে আমাদের এগিয়ে চলার প্রতিটি মুর্হুতই আমাদের কাছে কষ্টসাধ্য অর্জন।
নিজের কাছেই প্রতিনয়ত মনে হয় প্রতিদিন একটি করে পত্রিকা প্রকাশ একটি করে যুদ্ধ জয়ের অসাধ্য সাধন ; কারন সাধ্যের সীমানা যেখানে কাঁটাতার আর ঝুলকালিতে ভরা। হাতের তালুতে কাঁচ নিয়ে তুলো ধরলেও যেমন ব্যথা লাগে অবস্থা একেবারে সেইরকম হিমশিম। তারপরও সত্যের পথে সততার সাথে চলার যে বজ্রদীপ্ত অঙ্গীকার তা অব্যাহত ছিল ; বিস্ময় নিয়ে প্রতিদিন সকালে দেখি অব্যাহত থাকছেও। তবে প্রশ্ন জাগে এভাবে কতদিন ? কারন পিঠ দেনার দেয়ালে ; যা বাড়ছে জ্যমিতিক-গাণিতিক দুই হারেই প্রতিদিন। আয় ও ব্যয়ের বিস্তর ফারাক ; ব্যয় দিয়ে আয় মেটাতে হয়। দেনা বেচে আয় করার মতো অদ্ভুত কৌশলে চলতে হয়। এর মধ্যেও যারা পারে, তারা পারে বলেই পারে। তবে এটিও একধরনের পরাজয় বিক্রি করে বিজয় ক্রয়।
আমার অভিজ্ঞতা বলছে, সততা ও পাঠকের উপর নির্ভর করে স্থানীয় পর্যায় থেকে এক বা একাধিক পত্রিকা প্রকাশ একেবারেই অসম্ভব একটি চেষ্টা। পাঠক স্বল্পতা একটি চরম সমস্যা। এখানে এই সমস্যাটির চুড়ান্ত পর্যায় চলছে। অনেক গুলো পত্রিকার অসম প্রতিযোগীতা এর প্রধান কারন। এখানে একজন পত্রিকা মালিককে সবসময়ই পাঠক খুঁজে বেড়াতে হয়। “ভিন্ন প্রক্রিয়ায়” পত্রিকা প্রকাশের নজীর দেশজুড়েই আছে। আমরাও যে সে নজীরের ভাগীদার হতে পারি না তা নয়। তবে ঐ যে সততার কথা বলেছি সেখান থেকে এই চুল নড়ার সুযোগ নেই। কারন পরাজয় বেচে বিজয় কেনার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। যে ক’দিন পারা যায় পকেটের পয়সাতেই চলবে। হয়তে একদিন কালের যাত্রার সঙ্গী হতে হবে। তবে সেটা কবে এখনও জানিনা।
বিছিন্ন অনেক ঘটনাই আমাদের সঙ্গী হয়। সব বলার ফুরসত কোথায়। যেমন ধরুন সরকারী বিজ্ঞাপন। সরকারী তালিকাভুক্তি বা সরকারী বিজ্ঞাপন রেটের দৌড়ে এই জেলায় সবার উপরে হলেও বিজ্ঞাপন ধরে আনার দৌড়ে আমরা সবার পেছনে। তাই বিজ্ঞাপনের চেহারাগুলো থাকে সবসময়ই অধরা ; একেবারেই অন্যায্য বন্টন এর প্রধান কারন। অধিকারের জায়গাটি এখানে বলাৎকার হয়ে যায়। কার কথা কে শোনে ! সরকারী দপ্তর থেকে চিঠি আসে ; বাবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু‘ সেটি তো আসে আরেকটি সরকারী দপ্তরে। অবস্থার পরিবর্তন হয় না। কেউ কেউ হয় অবস্থার শিকার ; আর কেউ কেউ শিকার করে নেয় স্বয়ং অবস্থাকেই
যা হোক, যাত্রা নিবির্ঘন্ন করতে চেষ্টার প্রাণান্ত ; তবে মরিয়া নই। কারন বৈষম্যে ভারসাম্য ধরে রাখা অসম্ভব। আবার অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো ইউটোপিয়ায় ভোগার দায় নেয়ার একদম ই”েছ নেই। কারন অনেক হয়েছে বোধহয়। প্রতিনিয়তই তাই বিকল্প চিন্তা ; চিন্তার বিকল্প।
এই কঠিন যাত্রায় যারা সাথে ছিলেন, থাকছেন সবার প্রতি একটিই শব্দ ‘কৃতজ্ঞ’। সততা যেখানে একমাত্র সম্বল সেখানে এটিই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। সততা বেঁচে থাকলেই সৎ মানুষেরা বেঁচে থাকবে।
আজকের এই দিনে সকল পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, সংবাদকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীদেরকে অনেক শুভে”ছা ও ধন্যবাদ।
যাদের কথা না বললেই নয় ‘বিনালাভে বেশী শ্রম দিয়ে থাকেন’—–সেই শ্রদ্ধেয় সকল কলাকুশলী ; যারা প্রতিনিয়তই আলো জ্বালিয়ে বসে থাকেন অফিসে; আমার তারা ; খুবই কাছের মানুষগুলো—-একদিন সবকিছু থেমে গেলেও যাদের নাম মনে থাকবে—-তাদের প্রতি রইল সবো”র্চ কৃতজ্ঞতা।
সবাই ভাল থাকবেন।
Leave a Reply