December 22, 2024, 5:49 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার মিরপুরে স্কুলছাত্র দেব দত্ত (৯) হত্যা মামলায় এক আসামিকে ফাঁসি এবং দুইজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (০৭ নভেম্বর) কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় দেন। আদালত একইসঙ্গে তাদের উভয়কে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সবুজ মল্লিক কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের তুফান মল্লিকের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি সবুজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আমৃত্যু কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হাবিবুর রহমান হাব্বুল এবং এরশাদ আলী। হাবিবুর রহমান হাব্বুল কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের আমান আলীর ছেলে। এরশাদ একই গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে। তারা দুজনই পলাতক রয়েছেন।
নিহত দেবদত্ত কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মালিথা গ্রামের পবিত্র দত্তের ছেলে এবং চিথলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মিরপুরের আলোচিত স্কুলছাত্র দেবদত্ত অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি নাঈম ইসলাম (২৭) ও জোয়ার আলী (২৮) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। ২৬ জুন উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের আমতলা মাঠে ও চিথলিয়া প্রবেশমুখ হাবাতগাড়ী ব্রিজের পাশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহত নাঈম ইসলাম মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মালিথা পাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে ও যোয়ার আলী একই গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে। তাদের স্বীকারোক্তিনুযায়ী ২০১৮ সালের ২৭ জুন দুপুরে চিথলিয়া গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির শৌচাগারের পাশে গর্ত খুঁড়ে দেবদত্তের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।
এর আগে ২০১৮ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দেবদত্ত (৯) প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর স্থানীয়দের কাছ থেকে তার পরিবার জানতে পারে দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী রাস্তা থেকে দেবকে তুলে নিয়ে যায়। ওইদিন বিকেলে তার বাবা স্কুলশিক্ষক পবিত্র দত্তের মুঠোফোনে অপহরণকারীরা ফোন করে অর্ধ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় ১১ জুন দেবদত্তের বাবা পবিত্র দত্ত বাদী হয়ে মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলীম আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেন।
এদিকে দেবদত্তের পরিবার ও স্বজনরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, অপহরণের পর হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সবুজকে ফাঁসি এবং হাবিবুর রহমান ও এরশাদ আলীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
Leave a Reply