December 22, 2024, 3:15 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে ভারত থেকে আনা ৪৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার, আটক ৫ চুয়াডাঙ্গায় জামায়াত আমির/কোনো বিভক্তি নয়, ঐক্যই হোক এ জাতির সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি আ.লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না: হানিফের বিৃবতি পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দি ৪০ গ্রাম, নিম্নাঞ্চলে মৌসুমী ডাল ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা ১২০০ টাকা কেজি দরে প্রথম চালানে ভারতে গেল ১২ টন ইলিশ, ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির জন্য ২ সদস্যর আহ্বায়ক কমিটি, বিলুপ্ত মিরপুর উপজেলা কমিটি/ যা বললেন জাকির সরকার জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের রোহিঙ্গা সংকট অবহিত করলেন ড. ইউনূস, সমাধানে ৩ প্রস্তাব ইবিতে নব নিযুক্ত উপাচার্য/ শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলাই তার স্বপ্ন আট ঘন্টার ব্যবধানে মাগুরা ও ঝিনাইদহে সড়কে নিহত ৫ নিউইয়র্কে তৌহিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক/বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি

বঙ্গবন্ধু ; তাঁর থাকা না থাকায়/ শেখ হাসিনার অবিরাম অগ্রযাত্রা

ড. আমানুর আমান, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক কুষ্টিয়া/
শেখ মুজিবুর রহমান ; শুধু শেখ মুজিব ; শুধু মুজিব ; শুধুই বঙ্গবন্ধু ; যার জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না, সৃস্টি হতো না একটি জাতিসত্তা এবং আজও আমরা কোন না কোন দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ থাকতাম ; যে নামেই তাঁকে ডাকি না কেন তাঁর থাকা বা না থাকায় ; এই নামটিই একটি চেতনা; একটি আর্দশ ও একটি প্রেরণা ; এই নামেই ; একটি জাতি ; একটি  স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ।
তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ; হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ নেতা ; একটি জাতির পথ প্রদর্শক ; বাঙালী জাতির জনক। দুনিয়ার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু । বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা যে দেশে জন্মেছেন সে জাতি নিঃসন্দেহে একটি দুর্লভ সৌভাগ্যের অধিকারী যার রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল একটি জাতির স্বাধীনতা ; লক্ষ্য ছিল একটি সোনার দেশ গঠন। তাঁর নিজের ভাষায় ‘আমার বাংলা হবে রূপসী বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড।’
আজ তিনি টুঙ্গিপাড়ার কবরে শায়িত। আর কোনোদিন আসবেন না, দরদী কণ্ঠে ডাকবেন না ‘ভাইয়েরা আমার’।  একটি জাতিকে যিনি এই শব্দটি দিয়েই মোহিত করেছিলেন, উদ্দীপ্ত করেছিলেন ; আশ্বস্ত করেছিলেন মুক্তি এনে দেবেন। সেই জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের প্রতিটি ধাপেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলবো, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ বাংলা ও বাঙালির জন্য তার হৃদয়ের ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। সমুদ্র বা মহাসমুদ্রের গভীরতা পরিমাপ করা সম্ভব; কিন্তু বাংলা ও বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধুর দরদ ও ভালোবাসার গভীরতা অপরিমাপযোগ্য।

দেশ স্বাধীন করে সে দেশকে একটি সুদৃঢ় নীতি, আদর্শ ও সঙ্কল্পবোধ নিয়ে তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ গঠনে অগ্রসর হন। যেটা ছিল অনেকটা একার যুদ্ধ। দেশ ক্ষত-বিক্ষত, চারদিক জুড়ে অভাব-অনটন। অসীম সাহস নিয়ে সেদিন তিনি পরিকল্পনা হাতে নেন। বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। তাঁর হাতে ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক যুদ্ধ-বিধস্ত ও ক্ষয়ে যাওয়া অর্থনীতি, যার বর্তমান মুল্যমান ৩০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক রির্জাভ ছিল শুণ্য। শুরু করাটা তাই ছিল পাহড়সম চ্যালেঞ্জ। তিনি তা গ্রহন করেছিলেন। সামাজিক সমতা ও ন্যায়বিচার চিন্তাকে অগ্রভাগে ধারণ করে তিনি অর্থনীতি পুনর্গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন স্বপ্ন ছিল দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ এক “সোনার বাংলা”, যা ঐ বিপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়েও মোটেই কোন ইউটোপিয়া ছিল না। কারন বাস্তববাদী ও দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধু দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করতেন যে দেশ কয়েক শতাব্দী আগেও কৃষি উৎপাদন, সোনালি আঁশ পাট, মসলিন, রেশম, সুতি বস্ত্র এবং মসলা রপ্তানিতে সমৃদ্ধ এক সোনার দেশ ছিল সেই দেশ কখনও পিছিয়ে থাকতে পারে না।
বঙ্গবন্ধু পরিকল্পিত উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে আধুনিক রাষ্ট্রের এক রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন এবং তা বাস্তবায়নে উন্নয়ন চর্চা ও চিন্তা-চেতনায় ব্যক্তিত্বের সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন। টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন তা প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-১৯৭৮) প্রতিফলিত হয়েছিল। সাড়ে তিন বছরের স্বল্প পরিসরে বঙ্গবন্ধু এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধির দিকে যাত্রার এক সোনালী সোপান তৈরী করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
কিন্তু নিজ হাতে করা মুক্ত ও স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর এ স্বপ্নের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। আন্তর্জাতিক চক্রান্তের সুযোগ নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে হত্যা করে সেদিন ঘাতকরা শুধু একটি জাতির আশা-প্রত্যাশাকে ভেঙে স্তব্ধ করে দেয়নি, নস্যাৎ করে দেয় একটি উন্নয়ন স্বপ্নকেও।

জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করেই খুনি চক্র ক্ষান্ত হয়নি। একই বছরের ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে-বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা বারবার নেতৃত্ব দিয়েছেন-জাতীয় চার নেতাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব শূন্যতা তৈরি করা। কিন্তু ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্র আমরা সফল হতে দেইনি।
‘পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে পরিণতি সৃষ্টি করা হয়েছিল সেখানে একটি চক্র চরম একটি প্রতিশোধ নিয়েছিল। সেটি বাঙালীর স্বাধীনাতা এনে দেয়ার প্রতিশোধ। তারা ভেবেছিল এ দেশ আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু তা হয়নি। কিন্তু সময়ের অমোঘ নিয়মে আজ সেই মুক্তির, সেই স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে দেশ ; জাতির পিতারই রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকার, তাঁরই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। বাংলাদেশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত পরিকল্পনা, তাঁর দীর্ঘলালিত সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে নানা চড়াাই-উৎরাই পেরিয়ে ২০২১ সালে এসে পৌঁছেছি আমরা। ৪০ বছর আগে আওয়ামী লীগের রক্তে ভেজা পতাকা দলীয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতে আমরা তুলে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজকে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, ‘আমি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, বাংলাদেশ অর্জন করেছি। আমি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখি, সোনার বাংলা অর্জন করবো।’ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কর্ম প্রচেষ্টার ভেতরে জাতির জনকের উপস্থিতি ঘটেছে।’

জাতির জনক অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে ভিত্তিভূমি তৈরি করে দিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে, শোককে শক্তিতে পরিণত করেছেন। তিনি নিষ্ঠা, সততা ও সাহসের সাথে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে জাতিকে সাফল্যের সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

২০০৯ সালে বর্তমান সরকারই দিনবদলের সনদ গ্রহণ করেছিল। আনা হয়েছিল ‘রূপকল্প ২০২১’। প্রতিশ্রæতি ছিল ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনা, দারিদ্র্য মোকাবেলা, জনগণের জীবনমান উন্নয়নসহ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে আসীন করা। প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২০২১’ প্রণয়ন করে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা হয়েছিল। অন্যান্য লক্ষ্যসমূহের মধ্যে ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটানো। ষষ্ঠ এবং সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার হতে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয় সকল মানদন্ড পূরণ করতে পেরেছে, ২০১৫ সালের এমডিজি’র অধিকাংশ লক্ষ্য বিশেষত দারিদ্র্য নিরসন, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা, শিশু ও মাতৃত্বজনিত মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এর অসামান্য অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী অভিনন্দিত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। একই সময়ের সাথ ধরেই নিম্ন আয়ের দেশ হতে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের শ্রেণীভুক্ত হয়েছে এবং দশকব্যাপী ৭ শতাংশ হারে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনও সম্ভব হয়েছে। মাথাপিছু আয় ছাড়িয়ে গেছে ২ হাজার ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ দশমিক ০২৮ বিলিয়ন ডলার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যে পুরো বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে একটি শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে চলে আসবে।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel