December 21, 2024, 10:38 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আজ রাত থেকে শুরু হচ্ছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। সকল ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে চলবে সাঁড়াশি অভিযান। তবে পাশাপাশি নিয়মিত টহল ও নজরদারি অব্যাহত রাখাবে এ বাহিনী।
জানা গেছে, যৌথ এই অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্টগার্ড এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা অংশ নেবেন। সব বাহিনী সমন্বয় করে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। কোনো অপরাধী যেন ছাড় না পায় সে বিষয়ে লক্ষ রাখা হবে।
অভিযান বিষয়ে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে বুধবার থেকে যৌথ বাহিনীর অপারেশন শুরু হবে। একইসাথে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মাদক চোরাচালান ও এরসাথে সম্পৃক্ত গডফাদারদেরও ধরা হবে। অভিযানকে সফল করতে তিনি সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের খবরে দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। থানায় সংরক্ষিত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয় কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ। তবে সে সংখ্যা খুবই নগণ্য। বহু অস্ত্র বাইরে রয়ে গেছে। সেসব অস্ত্র এবং আগে থেকে অনেকের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির কাছে এ ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষিত থাকলে মঙ্গলবারের (৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যে কাছের থানায় জমা দিতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
এ অবস্থায় বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রমসহ নিয়মিত টহল ও নজরদারি অব্যাহত রাখতে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে।
কোনো অভিযান পরিচালনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে তবে গ্রেপ্তার করতে হবে। পরিচয় না দিয়ে কোনো অবস্থাতেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না মর্মে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থগিত করা লাইসেন্সের বিপরীতে থাকা অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা না দিলে উদ্ধার অভিযানে সেগুলো জব্দ করা হবে। একই সঙ্গে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেহাত হওয়া ও হারানো অস্ত্রসহ যেকোনো অবৈধ অস্ত্র এ অভিযানে উদ্ধার করা হবে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কোর কমিটির মাধ্যমে স্থগিত করা লাইসেন্সের তালিকা পর্যালোচনার ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হবে। এই কমিটিতে পুলিশ সুপার, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
এছাড়া অবৈধ অস্ত্র সংরক্ষণ বা হেফাজতকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জেলা তথ্য অফিস প্রচার করবে।
বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট/
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে সব মিলিয়ে পুলিশের ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র ও ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২ রাউন্ড গুলি লুট হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, অস্ত্র ছাড়াও ৩১ হাজার ৪৪ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের সেল, ৪ হাজার ৬৯২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড লুণ্ঠিত হয়।
লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৭.৬২ বোরের রাইফেল আছে ১ হাজার ১৪৭টি। ৭.৬২ বোরের পিস্তল ১ হাজার ৫৫৬টি।
মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৭৬৩টি। এখন উদ্ধার হয়নি ২ হাজার ৬৬টি। গুলি উদ্ধার হয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮২ রাউন্ড। এখনও বেহাত আছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৬৬০ রাউন্ড গুলি।
Leave a Reply