December 21, 2024, 8:24 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিশৃঙ্খলা ও নাশকতার সময় শাসক দল আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা কে কি ভুমিকা পালন করেছেন তার বিশদ তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত হবে কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যন্ত। তদন্তে দেশজুড়ে চলা নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধে এসব নেতাদের কি ভুমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্র বলছে, নেতাদের ভুমিকায় স্বয়ং ক্ষুব্ধ হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সমন্বয়হীনতা ও নেতৃত্বের অযোগ্যতাকে আমলে আনা হচ্ছে।
জেলা উপজেলা থেকে বিভিন্ন গোষেন্দা সংস্থার করা নানা প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সামনে এসেছে বলে জানা গেছে। এমনকি দায়িত্বশীল পদে থেকে দলের সংকট মুহূর্তে অনেক নেতা গাঢাকা পর্যন্ত দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি দলের এমপিসহ প্রভাবশালী যারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন তাদের তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতা, ঢাকার দলীয় এমপিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর বার্তা তিনি জানিয়ে দেন মহানগরী ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, ওয়াকিল উদ্দিন এমপি, সোলায়মান সেলিম এমপি, মশিউর রহমান মোল্লা সজল এমপি, ড. আওলাদ হোসেন এমপি, যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া সরোয়ার ডেইজী, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকসূত্র জানান, বৈঠকে যারা দায়িত্বশীল পদে থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন, কেউ কেউ বিদেশ গিয়েছেন তাদের তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর বাইরে জেলাগুলোতে অবস্থা আরও খারাপ ছিল বলে প্রকাশ করা হয়েছে। জেলাগুলোকে আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গসংগঠনের কোন নেতাকে কর্মীরা মাঠে পায়নি। এসময় কোন এমপিও এলাকায় ছিলেন না। থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, অনেক আওয়ামী লীগ নেতাদের ছেলেমেয়েরা এবং অনেক আত্মীয়স্বজনও কোটা আন্দোলনে সামিল হয়েছে। কারা এরা তা সুনির্দ্দিষ্ট করে তালিকা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অনেক জেলায় যেসব নন-আওয়ামী লীগাররা বড় বড় পদে বসে আছে তাদেরও তালিকা হচ্ছে বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, কুষ্টিয়াতেও এ তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা বলছেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থা এটা তৈরি করছে, অন্য একটি সংস্থা সেটা ভেরিফাই করবে।
Leave a Reply