October 30, 2024, 8:04 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের নির্মাণাধীন নতুন ভবনের সামনে থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থাপিত ম্যুরাল সরিয়ে পূণঃস্থাপনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান। তিনি বলেছেন জাতির পিতার অপরিকল্পিত ম্যুরাল সড়িয়ে তিনি পূণঃস্থাপন করেছেন। কিনি মনে করেন জাতির পিতার প্রতিকৃতিকে শৌচাগারের পাশ থেকে উদ্ধার করে তিনি এই মহান নেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন।
বিভিন্ন প্রত্রিকার সাংবাদিকদের সাথে সোমবার রাতে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন নতুন একটি বড় মুর্যাল নির্মাণ করা হয়েছে ভবনের মুল ভবনের দেওয়ালে।
তিনি জানান গত বছর এই মাসেই কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নিবাচিত হয়েই তিনি এই ম্যুরাল বির্তকে পড়ে যান। বিভিন্ন মহল থেকে তার কাছে ম্যুরালের বিরুদ্ধে কথা আসতে থাকে। বিশেষ করে জাতির পিতার ম্যুরাল ভবনের শৌচারের পাশে নির্মিত হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এটি নির্মাণ করে যান সাবেক চেয়ারম্যান হাজি রবিউল ইসলাম। শৌচাগারের পাশে জাতির পিতার ম্যুরাল তাঁর সম্মানের প্রতি চরম আঘাত বলে মনে করেন অনেকে।
সদর উদ্দিন খান বলেন কয়েক বছর আগে সরকার থেকে একযোগে সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল নির্মানের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয় এবং একই সাথে ডিজাইন সরবরাহ করে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ৫ লাখ টাকা বরাদ্দে সে সময় তড়িঘড়ি করে জেলা পরিষদের নতুন ভবনের এক পাশের মুর্যাল নির্মাণ করেন তৎকালীন চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম। নতুন ভবন হওয়ার কারনে মুর্যালটি অনেকটা আড়ালে চলে যায়। নিচতলার পশ্চিম অংশে শৌচাগারের সাথে লাগোয়া হয়ে যায় মুর্যালটি। ে নিচতলায় শৗচাগারের ঠিক সামনেই পড়ে মুর্যালটি। একই সাথে কয়েকটি দোকান ঢেকে যাওয়ার পর নতুন নির্মিত ব্যাংকের বুথে আসা-যাওয়ার সমস্যার কারনে মুর্যালটি অপসারন করার উদ্যোগ নেয় বর্তমান পরিষদ।
জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, ‘তখন তড়িঘড়ি কাজ করে এটির উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম। মুর্যালটির কারনে নানা সমস্যা হচ্ছিল। এ কারনে সেটি অপসারন করা হয়েছে। একই সাথে ভবনে ঢুকতেই মুল দেওয়ালের সাথে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রোট্রেট বাঁধায় করা হয়েছে, অপসারন করা মুর্যালটির চেয়ে এটি আয়তনে বড় ও একই ডিজাইনের। নতুনটি নির্মাণ করা শেষ হলে পুরাতনটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে রোববার।’
জেলা পরিষদের ওই সূত্র জানায়, বিষয়টি মন্ত্রনালয়সহ সবখানে জানিয়ে অনুমতি পাওয়ার পর অপসারন করা হয়েছে। এখানে কোন ঝামেলা নেই। বরং অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত মুর্যালটি অপসারন করার কারনে সৌন্দর্য্য বেড়েছে।
এদিকে মুর্যালটি অপসারন নিয়ে আগের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এটিকে ভালভাবে নেননি। তিনি এ জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানকে নানাভাবে দায়ী করেন।
হাজী রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,‘মুর্যালটি অপসারন করে বঙ্গবন্ধুকে খাট করা হয়েছে। এটি অপসারন করা ঠিক হয়নি। যখন হাতুড়ি মারা হয় সেটি মনে হচ্ছিলো আমার মাথায় এসে পড়ছে।
এদিকে জেলা পরিষদের ফেসবুক পেজ থেকে নতুন মুর্যালের একটি ছবি দিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলামকে নিয়ে নানা রকম কথা লেখা হয়েছে।
জেলা পরিষদের একাধিক সদস্য ম্যুরাল পূণঃস্থাপনকে স্বাগদ জানিয়ে বলেন সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই এটি করা হয়েছে।
সদস্য জহুরুল ইসলাম রাজ বলেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙ্গার বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম তা সঠিক নয়। তিনি বলেন হাজি রবিউল নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য বক্তব্য দিয়েছেন কারণ ম্যুরাল নির্মিত হয়েছিল শৌচাগারের পাশে অবস্থিত। সেটি ছির অনেকাট অদৃশ্যমান। বর্তমান চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান মার্কেটের সামনে এনে এটিকে দৃশ্যমান করেছেন। তিনি বলেন কাউকে ছোট করার উদ্দেশ্যে কিছু মিথ্যা বললেই সত্য হয়ে যায় না ।
বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান বলেন,‘ আগের মুর্যালটি তড়িঘড়ি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করার কারনে এটা শৌচাগারের পাশে অবস্থিত হওয়ায় সৌন্দর্য্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নানা কথা হচ্ছিল। এছাড়া ভবনের সিঁড়ি ও দোকান আড়াল হয়ে যাচ্ছিল। এসব কারনে সেটি অপসারন করার আগেই অনুমতি গ্রহন করা হয়েছে এবং নতুন একটি মুর্যাল নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন মুর্যাল নির্মাণ করার পর পুরাতনটি অপাসরন করা হয়েছে। এটি নিয়ে যারা কথা বলছেন তারা ভুল বুঝে বলছেন।’
Leave a Reply