শুভব্রত আমান/
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পৌঁছেছে সুন্দরবন এক্সপ্রেস। ১ নভেম্বর রাত পৌনে ১০টায় খুলনা স্টেশনের ১নং প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঢাকায় পৌঁছায় ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে।
পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম যাত্রায় অংশ নিয়ে যারা ইতিহাসে স্থান নিয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনের সাথে এক থেকে দেড় মিনিটের কথায় জানা গেল তারা অসম্ভব খুশী। যাত্রার শুরুতেই তাদের মধ্যে প্রচুর উচ্ছাস-উদ্দীপনা কাজ করে। এর আগে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ট্রেনে ঢাকা গেলেও এবার পদ্মা সেতুর কারনে অনুভুতি ভিন্ন বলে জানান অনেকে।
এদিকে যাত্রাপথে যে সকল স্টেশনে ট্রেনটি থেমেছিল সেখানেও প্রচুর সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটেছিল। অনেকেই জানান তারা ট্রেনটি দেখতে এসেছেন।
রাতে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে এ ট্রেনটি পৌঁছায় ১ টা ১৫ মিনিটে। সেখানে থামে দেড় মিনিট। সেখানে ৫০ জন যাত্রী থাকলেও সাধারণ মানুষের সংখ্যা ছিল কয়েকশ। অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায় সবাই ট্রেন দেখতে এসেছেন।
কুষ্টিয়ার এক যাত্রী স্বপন হোসেন জানান, এটি তার কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো। বিশেষ করে পদ্মা সেতু পার হবে ট্রেন এটা তিনি কল্পনাও করেননি বলে জানান। তিনি সেই যাত্রার সঙ্গী হতে পেরে নিজেকে ইতিহাসে স্থান দিতে পেরেছেন বলে অনুভুতি প্রকাশ করলেন।
ট্রেন যাত্রা দেখতে এসেছেন তাদের একজন কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া পাবলিক স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনাজ পারভীন। মধ্য রাতে তিনি যখন অপেক্ষা করছিলেন ট্রেনটি কখন আসবে তখন তিনি জানান পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিলেন গাড়ী ভাড়া করে। শুনেছিলেন এর উপর দিয়ে ট্রেন যাবে। সেই ট্রেনে তিনি যাত্রী হতে পারেন নি। তবে তিনি ট্রেনটি দেখতে মিস করতে চাননি বলে জানান। শীঘ্রই যাত্রী হবেন বলে জানান।
ট্রেনের একজন সহকারী পরিচালক নাম প্রকাশ না করে জানান বিভিন্ন স্টেশনেই এমন সাধারণ মানুষ দেখা গেছে যারা জাস্ট ট্রেনটি দেখতে স্টেশনে অপেক্ষা করেছেন। তিনি জানান এজন্য ট্রেন চলাচলে সময়েও হালকা দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে ১২ মিনিট লেটে এসেছেন। সাধারণ মানুষের আবেগকে সম্মান জানাতে কোথাও কোথাও একটু দাঁড়াতে হয়েছে।
এর আগে খুলনা রেল স্টেশনের মাস্টার মাসুদ রানা জানান সুন্দরবন এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পোড়াদাহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। নতুন এই রুট পরিবর্তনের ফলে পূর্বের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। প্রথম যাত্রায় ট্রেনটি ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছেড়েছে।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ১৩টি কোচ রয়েছে। রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন ট্রেনে আসন ৮৬০টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি বার্থ ৪৮টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। আর ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনে আসন সংখ্যা ৯০৮টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি সিট ৯৬টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) শোভন চেয়ার শ্রেণীর ভাড়া ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণীর ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণীর ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণীর ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণীর ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণীর ভাড়া ১৪৯৫ টাকা।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি