দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের কমিশন এজেন্ট ঘোষণার পরও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট স্থগিত করেছে। সোমবার থেকে এ ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এর ফলে খুলনায় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এ ধর্মঘট পালন করছে।
জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের তিন দফা দাবি হচ্ছে- জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।
পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির খুলনা জেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ মো. মুরাদ বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। দাবিগুলো অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সরকার দাবি পূরণ না করায় রোববার সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় সভাপতি আবদুল গফফার বিশ্বাস বলেন, তিন দফা দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করছে তেল ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা কয়েকবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রতিবারই সময় নিয়েছেন কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে জ্বালানি তেল বিপণনে সরকার ও বিপিসির অনুমতিপ্রাপ্ত জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী এবং ডিলারদের কমিশন এজেন্ট ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার নিম্নোক্ত শর্তে নতুন ফিলিং স্টেশন/সার্ভিস স্টেশন সংক্রান্ত নীতিমালা (সংশোধিত), ২০১৪ অনুযায়ী এবং জ্বালানি তেল বিপণনে সরকার/বিপিসি কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী/ডিলারদের কমিশন এজেন্ট ঘোষণা করল।
শর্তগুলো হলো–
১. জ্বালানি তেলের ক্রয়মূল্য এবং বিক্রয়মূল্য সরকার/বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক নির্ধারিত হবে। জ্বালানি তেলের কমিশন এজেন্ট শুধু সরকার/বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)/জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহকৃত জ্বালানি তেল বিক্রয় করার জন্য নির্ধারিত কমিশন ভোগ করবে।
২. জ্বালানি তেলের কমিশন এজেন্টরা তেল বিপণন কোম্পানির কাছে তেলের মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে জ্বালানি তেল গ্রহণ করে শুধু গ্রাহকের কাছে বিক্রয়/সরবরাহ করবে। এর দ্বারা কমিশন এজেন্টরা বিপণন কোম্পানির মালিকানা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনো অংশীদার বিবেচিত হবে না।
৩. জ্বালানি তেলের কমিশন এজেন্টরা জ্বালানি তেল বিপণনে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এবং জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক/নির্দেশনা অনুসারে বিপণন/সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
৪. কমিশন এজেন্টদের জন্য জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনাসহ দেশে প্রচলিত যাবতীয় আইন, বিধিবিধান এবং নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। তবে দেশে প্রচলিত কোনো আইন, বিধিবিধান এ প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিবিধান প্রাধান্য পাবে।
তবে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির প্রধান দাবি কমিশন বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপনে আসেনি। তাদের দাবিগুলো ছিল–
১. জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন ৭.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা।
২. পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীরা যে কমিশন এজেন্ট তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা।
৩. (ক) ট্যাংকলরী ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
(খ) ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ট্যাংকলরীর ইকোনমিক লাইফের জন্য পৃথকভাবে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি