December 22, 2024, 10:20 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১২ খুনির মধ্যে বাকি পাঁচ খুনি এখনো পলাতক। এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আর জিম্বাবুয়েতে পলাতক থাকা অবস্থায় একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ঐ পাঁচজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। তবে তাতে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
এরই মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পার হয়ে গেছে। । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার শেষ হয়েছে ১৩ বছর আগে। পলাতকদের মধ্যে দুজনের অবস্থান জানা গেলেও বাকি তিনজন কোথায় আছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ তিনজন এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আসা-যাওয়া করছেন।শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে পেরেছে। আবদুল মাজেদ দীর্ঘদিন দেশের বাইরে পালিয়ে ছিলেন। ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তারা হলেন- লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার)। অন্যদিকে, পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আজিজ পাশা। সবশেষ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে আব্দুল মাজেদের ফাঁসি হয়। ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এর পাঁচদিন পর ১২ এপ্রিল কার্যকর হয় তার ফাঁসি। তিনি দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে ছিলেন।
বাকি পাঁচ খুনির মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আর কানাডায় আছেন নূর চৌধুরী। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছে না সরকার। এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের নিজস্ব আইন।
এদিকে খন্দকার আব্দুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেম উদ্দিনের কোনো সন্ধান নেই। তারা কোথায় আছেন তার সুনিশ্চিত তথ্য নেই সরকারের কাছে। যদিও তাদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের পরোয়ানা জারি রয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খন্দকার আবদুর রশিদ কখনো পাকিস্তান কখনো লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। আর শরীফুল হক ডালিম রয়েছেন পাকিস্তানে। তবে এসব তথ্য যে পুরোপুরি নিশ্চিত তা বলা যাচ্ছে না।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, একমাত্র সহোদর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ আরও অনেককে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের পরবর্তীকালে দূতাবাসে চাকরিসহ বিদেশে পুনর্বাসন করে তৎকালীন সামরিক সরকার।
শেষপর্যন্ত এ হত্যা মামলায় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল বিচার শেষে ১৫ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। তবে আপিলের রায়ে খালাস পান তিনজন। বাকি ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।
সবশেষ ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে আপিল বিভাগ। তাতে আসামিদের করা রিভিউ পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়ে গেলে পাঁচ খুনির ফাঁসির কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়।
Leave a Reply