দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশে এবার ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগে থেকেই রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত তিন বছরের পরিসংখ্যান এমনই বলছে। তার মানে ডেঙ্গু প্রকোপের মূল সময় (পিক টাইম) আসা এখনও বাকি আছে। তাই বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ প্রকোপ থাকতে পারে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। ওই বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৬৬টি মৃত্যু হলেও ১৬৪টি মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু বলে জানিয়েছিল সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির কারণে ডেঙ্গু রোগী কম ছিল। তবে ২০২১ সালে আবারও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা গেলে জুলাই থেকে শুরু হয় রোগী বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা। সে সময় জুলাইয়ে রোগী ছিল ২ হাজার ২৮৬, আগস্টে ছিল ৭ হাজার ৬৯৮, সেপ্টেম্বরে ছিল ৭ হাজার ৮৪১, অক্টোবরে ছিল ৫ হাজার ৪৫৮, নভেম্বরে ছিল ৩ হাজার ৫৬৭ জন। সে বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। আর মারা গিয়েছিল ১০৫ জন। গত বছর ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে জুন থেকে। জুনে ৭৩৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও জুলাই থেকে তা দেড় হাজার ছাড়িয়ে যায়। আগস্টে ভর্তি হয় ৩ হাজার ৫২১ জন, সেপ্টেম্বরে ৯ হাজার ৯৯১, অক্টোবরে ২১ হাজার ৯৩২, নভেম্বরে ১৯ হাজার ৩৩৪ এবং ডিসেম্বরে ছিল ৫ হাজার ২৪ জন। সে বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং মারা গিয়েছিল ২৮১ জন।
এদিকে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ১ আগস্ট পর্যন্ত মারা গেছেন ২৬১ জন। এরমধ্যে শুধু জুলাইয়ে মারা গেছেন ২০৪ জন। এযাবৎকালে ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু আগে কখনও দেখা যায়নি বাংলাদেশে। ডেঙ্গুতে গত বছর সর্বাধিক ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল নভেম্বরে ১১৩ জন। ২০১৯ সালের আগস্টে সর্বাধিক ৫২ হাজার রোগী ভর্তি হলেও মৃত্যু ছিল ৮৩ জন। এই বছরের জুলাইয়ে মোট রোগীর সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
গত চার বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালে পিক সিজন ছিল আগস্টে, ২০২১ সালে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে, ২০২২ সালে অক্টোবর ও নভেম্বরে। অর্থাৎ পিক সিজন ধীরে ধীরে বছরের শেষভাগে যাচ্ছে, আবার এই শেষভাগে যাওয়ার কারণে পরবর্তী বছরে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ জানুয়ারি থেকেই দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৫ হাজার ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৭ হাজার ৯৭৮ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। অর্থাৎ মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে।
সারা দেশে এডিস মশা মারতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি