December 22, 2024, 10:57 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় গত চারদিনে প্রায় হাজারেরও বেশি মানুষ ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সবথেকে বেশী রোগী ভর্তি হয়েছে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে ১২ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ১৪৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যা শয্যার তুলনায় ১২ গুণ বেশি। হসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যঅ ২৫০।
চিকিৎসকরা বলছেন আক্রান্তের হার কমার কোন লক্ষণ তারা দেখছেন না।
বৃহস্পতিবার ভোরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই রোগীরা হাসপাতালে আসছেন। তাদের কাউকে কাউকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। কাউকে কাউকে ভর্তি করে নেয়া হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নার্সরা। শয্যা ও বারান্দায় জায়গা স্বল্পতার কারণে গাদাগাদি করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার জানান ওষুধ স্বল্পতা তীব্র নয়। সেটা তারা মোকাবেলা করছেন। তবে তীব্র শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীদের শয্যার ব্যবস্থা করতে পারছেন না।
তিনি জানান ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভাল পরিবেশ দিতে পারলে দ্রত উন্নতি করা সম্ভব। কিন্তু সেটি তারা পারছেন না।
এদিকে আক্রান্ত রোগীদের মেঝেতে রাখায় অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ছে। শয্যা সংকটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। রোগীর চাপ থাকায় হাসপাতালের বহির্বিভাগেও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক মুসা কবির জানান, গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে কমকয়সীরা আক্রান্ত হয়ে এলও এখন সববয়সীরাই আসছেন। তিনি জানান ১২ বেডের এই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে। আক্রান্তদের সারিয়ে তোলার আগেই নতুন রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে।
তিনিও জানান ওষুধ ও স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই। ঘাটতি রয়েছে পর্যাপ্ত শয্যা ও নার্স।
হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত কুষ্টিয়ার থানাপাড়ার বস্তির বাসিন্দা হারুন-উর রশিদ আসকারী। তিনি তিনদিন ধরে আক্রান্ত হয়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন। তিনি জানান বারান্দায় ধুলা, বালি ও গরম। একই সাথে মশা মাছির উপদ্রব। খুব কষ্ট হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বিভিন্ন ওয়ার্ডের পথে ও মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে সাড়ি সাড়ি চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। খোলা বারান্দায় অনেক সময় হাঁটার জায়গা না তাকায় বেডের ওপর দিয়ে জুতো-স্যান্ডেল পরে চলাফেরা করছে মানুষজন। অনেক সময় রোগীদের গায়ের সঙ্গে তাদের পায়ের ধাক্কা লাগছে বলে অনেকেই জানান।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সমগ্র জেলার মধ্যে কুষ্টিয়া পৌরসভা ও মিরপুর উপজেলায় তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এটিকে মৌসুমী রোগ বলছেন তিনি। জানান, এই সময়ে এটি হয়ে থাকে।
তিনি জানান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য জেলার সব সরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply