December 22, 2024, 7:46 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে যদি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রষ্ট্রিপতি থেকে যদি কোন নির্দেশনা আসে সেটাতে সম্মান দেখানো হবে।
বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বিশেষ জরুরী সভায় এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শেখ অব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রো ভিসি প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।
সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় গত ১৯ মার্চ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের ঐ সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
সূত্র জানায়, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার একাডেমিক কাউন্সিলের ঐ সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হয়। সিন্ডিকেটের অভ্যন্তরীন সদস্যরা কোন মতামত কোন দিতে রাজি হননি। তবে কয়েকজন বহিস্থ সদস্য গুচ্ছের বাধ্যবাধকতা নিয়ে মহামান্য রষ্ট্রিপতির অনুশাসনের কথা তুলে ধরলে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হুবুহু গ্রহনের জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রষ্ট্রিপতি থেকে যদি কোন নির্দেশনা আসে সেটাতে ‘সম্মান দেখানো হবে’ শব্দটি সংযোজিত হয়।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু ইউসুফ মিয়া ভোট দানে বিরত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সদস্য ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মিথিলা তানজিল সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতি মেনে অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করে আসছিল। তারা বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করেও আসছিল গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য।
দেশে বর্তমানে তিনটি গুচ্ছে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় গুচ্ছ সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩টি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলার পরও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাইরে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
নানা অভিযোগ শোনা গেলেও এ পদ্ধতিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে, কমেছে খরচও। কিন্তু নানা কারণে বিশেষত পূর্বেকার মতো ভর্তি পরীক্ষা থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপত্তি জানিয়ে আসছিল। আরেকটি বড় কারনের মধ্যে ছিল আর্থিক ক্ষতি। গুচ্ছে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিষয়ের আবেদনের জন্য গুণতে হচ্ছে আবেদন ফি। ফলে একেক শিক্ষার্থীর ভর্তি আবেদনে চলে যায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে বছরব্যাপী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করেও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী পায়নি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি সাত থেকে আটবার অপেক্ষমাণ তালিকা দিতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। আসন ফাঁকা রেখেই শেষ করতে হয়েছে ভর্তি কার্যক্রম।
বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়, কিন্তু লাভ হয়নি। সরকার গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে অনড় থাকে।
গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় জগন্নাথ ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ২৬ ফেব্র“য়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বিশ্ববিদ্যায় কতৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
২৭ ফেব্র“য়ারি আলোচনায় বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আলোচনা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন যে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ছিল তারা সবাই আসছে।
Leave a Reply