October 30, 2024, 8:01 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে ঝুলিয়ে দেয়া তালা দু’দিনেও খোলা যায়নি। অগত্যা বাসাতেই অফিস করছেন উপাচার্য।
গত সোমবার এই তালা ঝোলান ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের বেশ কিছু সাবেক ছাত্র যারা সবাই বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করতেন ও বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছিলেন। তারা বিশ^বিদ্যালয়ে চাকুরী চান।
চাকরীর দাবিতে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতাদের আন্দোলন চলছে বিগত তিন বছর ধরে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর হারুন-উর-রশিদ আসকারীর আমলে (২০১৬-২০২০) প্রায় দুইশ জনকে বিশ^বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর বিভিন্ন পদে প্রায় দুই শতাধিক কর্মী নিয়োগ দিয়ে যান ‘ডে লেবার’ ভিত্তিতে বিশ^বিদ্যালয়ের সরকারী বরাদ্দ থেকে এক ধরনের ‘েথাক-বরাদ্দ’ দিয়ে তাদের মজুরী পরিশোধের ব্যবস্থা করে। এই ব্যবস্থা বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের (ইউজিসি) আইন পরিপন্থী হওয়ায় ইউজিসি আপত্তি দেয়। পরে পতন ঘটলে ২০২০ সালে নতুন প্রশাসন এসে এ ধরনের অনিয়মতান্ত্রিক অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়। ফলে মজুরী হারিয়ে আন্দোলনে নামে ঐ সকল কর্মীরা।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, মাঝে মধ্যেই তারা ক্যাম্পাসে এসে বিভিন্নভাবে আন্দোলন তৈরি করার চেষ্টা করে থাকে।
সম্প্রতি গত ১৪ ফেব্রæয়ারি বিশ^বিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীকে ‘নির্যাতনের’ অভিযোগ উত্থাপিত হবার পর ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরি হয়। এর মধ্যে গত রবিবার উপাচার্যের নিয়োগ অনিয়ম সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও প্রকাশ হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে এই চাকুরী প্রত্যাশীরা গত সোমবার (২০ ফেব্রæয়ারি) ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশ করে একই দাবিতে উপাচার্য অফিসে তারা ঝুলিয়ে দেয়।
এই ঘটনার নেতৃত্ব দেয় রাসেল জোয়ার্দ্দার ও মিজানুর রহমান টিটু। এরা দুজনেই বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা। দুজনেই থোক বরাদ্ধে ডে-লেবার হিসেবে কাজ করতেন।
সোমবার তালা দেয়ার পর মঙ্গলবার তালা ভেঙে ফেলা হয়। পরে আজ (বুধবার) সকালে আবার তারা তালা ঝুলিয়ে দেয়।
বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর শাহাদৎ হোসেন আজাদ জানান তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করছেন। তারা চাকুরী প্রত্যাশায় আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করা যায় কিভাবে সেটা খুঁজছেন।
বিশ^বিদ্যালয়ের হিসাব শাখার উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান যে প্রক্রিয়ায় এই ডে-লেবার নিয়োগ দিয়ে সরকারী অর্থে ব্যয় সেটানো হচ্ছিল সেটা অনিয়ম ছিল। সেটা কোনভাবেই ইউজিসি মেনে নেয়নি। যার কারনে এটা বাতিল করেছে প্রশাসন।
বিশ^বিদ্যালয় ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভ‚ঁইয়া জানান সরকারী নিয়মের মধ্যে পড়ে না এমন অর্থ ব্যয়ের কাজ কিভাবে অব্যাহতভাবে করা সম্ভব ? বর্তমান প্রশাসন খুবই আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম জানান চাকুরী পেতে হলে তার নিয়মতান্ত্রিক পথ রয়েছে। তারা আমার সাথে অনেকবার বসেছেন আমি বলেছি তারা যেহেতু একটি পরিস্থিতিতে ছিলেন। তাদেরকেই সহানভুতি আদায় করে নিতে হবে। কিন্তু তারা বিশ^বিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এটা অনুচিত। তিনি সবাইকে সঠিক পন্থায় দাবি দাওয়া প্রদানের অনুরোধ জানান।
Leave a Reply