দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
যুদ্ধ শুরু হয়েছিল বন্ধও হবে তবে এর জন্য ইউক্রেনকে কয়েকটি শর্ত মানতে হবে। শর্ত মেনে নিলেই থেকে যাবে যুদ্ধ। এমনটা বলছে রাশিয়া।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার সেখানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনও বেশ কিছু শর্ত দিয়ে যুদ্ধ থামানোর কথা বলে যাচ্ছে।
রাশিয়ার শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইউক্রেনের সাবেক চার প্রদেশ দনেতস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়াকে রুশ ভূখণ্ড বলে স্বীকৃতি দেওয়া, ক্রিমিয়া উপদ্বীপ থেকে নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করে নেওয়া।
পেসকভ বলেন, ‘যত দ্রুত ইউক্রেনের সরকার আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হবে— তত দ্রুত এসব কিছু (যুদ্ধ) শেষ হবেৃএবং ইউক্রেনের জনগণও এই ট্র্যাজেডি থেকে মুক্ত হয়ে নতুন করে তাদের জীবন শুরু করতে পারবে। আমরা সেটাই চাই।’
‘এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ইউক্রেনের কারণে। সে দেশের সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই যুদ্ধের সমাপ্তি নির্ভর করছে।’
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও ১০টি পয়েন্ট সম্বলিত একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন; কিন্তু সেই প্রস্তাবের প্রথম শর্তই হলো- ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর দখল করা সব অঞ্চল ফের দেশটিকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং রুশ সেনাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের সব ভূমিই তারা নিজেদের আয়ত্তে নিতে চান। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে কথিক গণভোটের মাধ্যমে নিখোঁজ হওয়া ক্রিমিয়াকেও আবার ইউক্রেনভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ডাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি আরও বলেছেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলে নিজেদের সব ভূখণ্ড দখলদার মুক্ত করা।’
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে আলোচনায় বসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের এক বছর পূর্তিকে সামনে রেখে সি চিন পিংকে লেখা এক চিঠিতে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। খবর আল–জাজিরার।
গতকাল বুধবার জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কা বলেন, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে চিঠিটি চীনের প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে জেলেনস্কি বারবারই সি চিন পিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তাঁর আশা, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর বেইজিং প্রভাব খাটাতে পারবে।
জেলেনস্কা সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে সৌজন্যমূলক চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ আমন্ত্রণে সাড়া পাওয়া যাবে বলে অত্যন্ত আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার আগে আগে চীন ও রাশিয়া ‘অপরিসীম’ অংশীদারত্ব ঘোষণা করে। ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান দেখিয়ে আসছে বেইজিং। আবার একই সময়ে মস্কোর সঙ্গেও সম্পর্ক গভীর করে যাচ্ছে চীন। বিশেষ করে জ্বালানি খাতে দু দেশের সম্পর্ক গভীর হচ্ছে।
তবে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, ইউক্রেনে লড়াই বন্ধে আলোচনার জন্য চীন শেষ পর্যন্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারে।
গত সেপ্টেম্বরে তৎকালীন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন। পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায়, তা নিশ্চিত করতে লড়াইরত সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
আগস্টে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, তিনি সিকে আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছেন। এ আলোচনা সহায়ক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাবেক সোভিয়েত অঙ্গরাজ্য ইউক্রেন। তারপর থেকেই জাতিগত সংঘাত শুরু হয় দেশটিতে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি