January 2, 2025, 8:56 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সবসময়ই ফেভারিট তালিকার দল রেকর্ড পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল প্রথম খেলায় উতরে গেছে। আর্জেন্টিনার মতো থুবড়ে পড়েনি। তবে প্রথম দিনের খেলায় সেই চিরচেনা ছন্দ ও নান্দনিক খেলায় ছিল না দলটি। হয়তো আর্জেন্টিার বাজে পরাজরে কারনে একধরনের চাপে ছিল খেলোয়াড়রা। অথবা খেলোয়াড়দের ইনজুরি বাঁচাতে অতিরিক্ত ঝুঁকি নেয়নি দলটি। কিন্তু তারপরও ইনজুরিতে রয়েছে দলের প্রাণ খেলোয়ার নেইমার। এ থেকে যথেষ্ট আশঙ্কাও রয়েছে।
শুরু থেকে বললে অবশ্য ভুল হবে, শুরুর মিনিটগুলোয় খানিকটা রঙহীন মনে হচ্ছিল ব্রাজিলকে; অন্তত পুরো ম্যাচে যা দেখিয়েছে, তার তুলনায় তো বটেই। তবে সময় যত গড়াল, ব্রাজিল ম্যাচের লাগামটা হাতে তুলে নিল ততই। ১৩ মিনিটে কর্নার থেকে নেইমারের অলিম্পিক গোলের চেষ্টা থেকে শুরু। এরপর মুহুর্মুহু আক্রমণে উঠেছেন রাফিনিয়া, ভিনিসিয়াসরা।
যদিও গোলের দেখা পেতে সময় লাগল ৬২ মিনিট। খানিকটা দুর্ভাগ্য আর প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ভানজা মিলিঙ্কোভিচ-স্যাভিচের কৃতিত্বও তাতে মিশে ছিল বৈকি! গোটা পাঁচেক দারুণ সেভ আর ক্লিয়ারেন্সে তিনিই ম্যাচের ঘণ্টাখানেক পর্যন্ত ম্যাচে জিইয়ে রেখেছিলেন সার্বদের। চেষ্টা করেছিলেন ৬২ মিনিটেও। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শটটা দিয়েছিলেন ঠেকিয়ে, তবে রিচার্লিসনের ফিরতি শটটা আর পারেননি। সহজ ট্যাপ ইনে গোলটা করেন শেষ ছয় ম্যাচে সাত গোল করা রিচার্লিসন।
গোলের জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকা ব্রাজিলকে সে মুহূর্তটা এনে দিয়েছিল একরাশ স্বস্তি। আর শুরুর এক ঘণ্টায় চোয়ালবদ্ধ রক্ষণে ব্রাজিলকে আটকে রাখা সার্বিয়ার মনোবলটা ভেঙে গেল সেখানেই।
মিনিট দশেক পর রিচার্লিসন যা করলেন, তা সার্বিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটাই ঠুকে দিলো। ভিনিসিয়াসের নিচু ক্রস একটা হেভি টাচে নিলেন আয়ত্বে, এরপর দারুণ এক ব্যাক ভলিতে বলটা আছড়ে ফেললেন সার্বদের জালে। যেভাবে পুরো প্রক্রিয়াটা সারলেন, তা দেখে কে ভাববে প্রতিপক্ষের বিপদসীমায় এই ম্যাচে এটা নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বল ছুঁয়েছেন তিনি?
ব্রাজিল গোল পেতে পারত আরও একটা। ক্যাসেমিরোর শটটা যদি না লাগত ক্রসবারে। তাতে ব্যবধানটা বাড়েনি বটে, তবে সেলেসাওদের আধিপত্যটা তাতে খাটো হয়নি একটুও। ২-০ গোলের জয়ে ঠিকই নিজেদের ফেভারিট প্রমাণ করেন নেইমাররা।
ইনজুরিতে নেইমার, বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা/
আর দুই গোল করলেই পেলের সমান ৭৭ গোলের মালিক হতে পারতেন নেইমার। সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে পেয়েছে দারুণ জয়ও। কিন্তু দিনশেষে শঙ্কায় সেলেসাওদের প্রাণভোমরা নেইমার।
ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত ছিলেন মাঠে। ওঠার সময় ২-০ গোলের লিডে সেলেসাওরা। তবুও মাঠ থেকে কী আর উঠতে চান নেইমার? কিন্তু বাধ্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। কারণ ডান পায়ের গোড়ালিতে পেয়েছেন ব্যথা। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে একাধিকবার সার্বিয়ান ফুটবলারদের ফাউলের শিকার হতে হয়েছে। গোটা ম্যাচে মোট ৯ বার। এর মধ্যে নিকোলা মিলানকোভিচের ফাউলটি ছিল সবচেয়ে সর্বনাশা। মাঠ ছাড়ার সময় দেখা যায় অনেকটাই বিষণ্ন নেইমার। চোখে ছিলো পানি। এরপর ম্যাচ শেষে বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায় তার ডান পায়ের গোড়ালি ফুলে গেছে।
ব্রাজিলের টিম চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই ব্যথা নিয়ে নেইমার শেষ ১১ মিনিট মাঠে খেলা চালিয়ে গেছেন। যা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। তবে ইনজুরি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না তারা। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে এই ইনজুরি সেরে উঠতে। তবে সেটি ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় থাকবে কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে কোচ তিতে জাগাচ্ছেন আশার আলো। জানিয়েছেন, নেইমারের ইনজুরি যতটা খারাপ দেখাচ্ছে ততটা নয়। দ্রুতই সেরে উঠবেন নেইমার, বিশ্বকাপেও খেলবেন।
বিশ্বকাপে নেইমারের ইনজুরি ভাগ্য অনেক খারাপ। এর আগে, ২০১৪ সালের ঘরের মাঠে সেমিফাইনালের আগে ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যেতে হয়েছিলো তাকে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপেও ছিলেন না পুরো ফিট। এমনকি এ বছরের শুরুতেও লম্বা ইনজুরিতে ছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন।
সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এরপর ২ ডিসেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে ক্যামেরুনের বিপক্ষে।
Leave a Reply