শুভব্রত আমান/মিথোস আমান/
শেষ মুহুর্তে এসে কুষ্টিয়ার কোরবানীর পশুর হাটগুলো এখন মুখর। চলছে বেচাকেনা। প্রতিদিন হাজার হাজার পশু কেনাবেচা চলছে জেলার ৬টি উপজেলার হাটগুলোতে। হাটের বাইরেও চলছে কেনা বেচা। কেনা বেচা চলছে বিভিন্ন বাড়ি বাড়িতে, রাস্তঘাটে। এবার জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে বেচা কেনার মান সন্তোষজনক। কেনা বা বেচা নিয়ে ক্রেতা বা বিক্রেতার কারোরই তেমন ক্ষোভ দেখতে পাওয়া যায়নি। তবে একটি বিষয়ে বিক্রেতারা জানিয়েছেন এবার জেলাতে বাইরে থেকে ক্রেতা কম এসেছে। বড় বড় গরুর একটি বড় অংশ ঢাকা ও চট্রগামে গেছে। বাকি পশুগুলো স্থানীয়ভাবেই বেচাকেনা হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য প্রায় ১ লাখ গরু ও মহিষ, ৮০ হাজার ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
জেলা পশু সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন স্থানীয়ভাবে সব পশু বিকি হয়ে যাবে কিনা এখনও বলা যাচ্ছে না।
মিরপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এস এম মাহমুদুল হক বলেন, এ বছর প্রান্তিক চাষীরা তাদের বিক্রয়যোগ্য সব পশু বিক্রি করতে পারবে কিনা সেই শঙ্কায় আছেন। অনেক খামারি ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণও নিয়েছেন। এছাড়া প্রান্তিক চাষীরা নিজ বাড়িতে গরু পালন করেছেন। উপজেলায় এ বছর সাড়ে ২১ হাজার গরু, মহিষ এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ছাগল, ভেড়া আছে বিক্রয়যোগ্য।
কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া এলাকার পশু পালনকারী অসীম উদ্দিন জানান এবার ৩টি দেশীয় জাতের ষাঁড় বড় করেছিলেন। তিনি দুটি গরু ইতোমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। দাম নিয়ে তিনি অখুশী নন। ঐ গরুর ক্রেতা ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান দাম নিয়ে খুব বারগেইনিং হয়নি। তিনি জানান তার মনে ক্রেতা সন্তুষ্টি নিয়েই গরুটি বিক্রি করেছেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান এ বছর কোরবানীল জন্য কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় বিক্রির জন্য যে পরিমাণ পশু প্রস্তত ছিল স্বাভাবিক সময়ে জেলার চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন এর ৬৫ শতাংশ।
তিনি জানানা এ জেলার বেশীরভাগ পশুর চাহিদা ঢাকা ও চট্টগ্রামের দিকে রয়েছে। কিন্তু এবারে হাওর অঞ্চলে বন্যার কারণে এসব পশু চট্রগ্রামের দিকে কম গেছে।
তিনি জানান সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ এসব পশু বিক্রয় হয়ে গেছে বলে খামারিদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে।
বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এবারও পূর্বের সময়গুলোর মতো পশু চাষীরা ব্যাংক থেকে সহায়তা নিয়েছিলেন। এটি এই অঞ্চলজুড়ে একটি সাধারণ প্রবণতা। সাধারণত চাষীরা পশু পালনের মৌসুমের শুরুতে ব্যাংক লোন নিয়ে পশু ক্রয় করে এবং ঈদে পশু বিক্রয়ের পর লোন পরিশোধ করে থাকে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মুনসুর রহমান বলেন, পশু মোটাতাজাকরণে লোকজন বিভিন্ন ব্যাংক স্বল্পমেয়াদী ঋণ দিয়ে থাকে। কৃষি বাংকও লোন দিয়েছে।
তিনি জানান তার ব্যাংক এ খাতে খামারিদের প্রায় ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য ব্যাংক, এনজিও এবং অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও ঋণ দিয়েছে বলে তিনি জানান। যার পরিমাণ প্রায় ৪শ কোটি টাকা হতে পারে বলে এই বাংক কর্মকর্তার অনুমান।
তিনি জানান প্রতি বছর ঈদের পরদিন এসব অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক পর্যায়ে কালেকশন বুথ (হালখাতা) স্থাপনে মাধ্যমে প্রদত্ত ঋণের টাকা সংগ্রহ করে। ঋণ গ্রহীতা খামারি ও চাষীরা বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করে থাকেন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি