দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আগামী অর্থ বছরে ৩৮ ধরনের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এসব সেবা নেয়া হবে, সেসব প্রতিষ্ঠান যদি সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র না দেখে সেবা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। করদাতার সংখ্যা ও করের পরিমাণ বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর কর না দিলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মত সেবা বন্ধের প্রস্তাবও রেখেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য এই বাজেট প্রস্তাব সংসদে তোলেন।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত অন্যান্য উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের ন্যায় আশাব্যঞ্জক নয়। উন্নত দেশের সোপানে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কর-জিডিপি অনুপাত অনেকাংশে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এ উদ্দেশ্যে দেশের করযোগ্য বিপুল জনগোষ্ঠীকে করের আওতায় আনতে পারলে কর আহরণের সক্ষমতা ও আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির আওতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি জানান, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বাড়াতে কতিপয় সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপন বাধ্যতামূলক করা। এসব ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ হিসেবে তিন ধরনের নথির যে কোনো একটি জমা দিলেই সেবা পাওয়া যাবে। ১. আয়কর রিটার্ন জমার বিষয়ে এনবিআরের প্রাপ্তিস্বীকার পত্র, ২. করদাতার নাম, টিন, কর দেওয়ার বছর উল্লেখ করে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এনবিআরের দেওয়া সনদ, অথবা ৩. করদাতার নাম, টিন, কর দেওয়ার বছর উল্লেখ করে কর উপ কমিশনারের দেয়া সনদ।
যে ৩৮ ধরনের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণের জন্য আবেদন, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হওয়া, ব্যবসায়িক সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ, সন্তান বা পোষ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ালেখা করা, অস্ত্রের লাইসেন্স নেয়া, আমদানি-রফতানি ব্যবসার সনদ থাকলে বা নতুন সনদ নিতে, সিটি বা পৌর এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স থাকলে বা নতুন সনদ নিতে, ডাক্তার, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ারের মত পেশাজীবীদের সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকলে বা সদস্য হতে চাইলে, বিবাহ নিবন্ধকের লাইসেন্স পেতে হলে, কোনো বাণিজ্য সংগঠনের সদস্য হলে বা সদস্য হতে চাইলে, ড্রাগ লাইসেন্স থাকলে বা করাতে চাইলে, দেশের যে কোনো জায়গায় বাণিজ্যিক বা শিল্প কারখানায় গ্যাস লাইন এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় বাসা বাড়ির গ্যাস সংযোগ নিতে এবং আগের সংযোগ বজায় রাখতে,নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেটের জন্য, নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেটের জন্য, ইটভাটার অনুমোদন নিতে, সিটি করপোরেশন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে, আমদানির এলসি খুলতে, যে কোনো ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্থিতি ১০ লাখ টাকার বেশি হলে,জমি বা বাসা ভাড়া দিলে, পরিবহন সেবার ব্যবসা করলে,এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাসে ১৬ হাজার টাকার বেশি পেলে, চার চাকার যে কোনা মোটরগাড়ি নিবন্ধন, ফিটনেস নবায়ন , মালিকানা হস্তান্তর করতে ও অনলাইনে যে কোনো ধরনের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে চাইলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
পাশাপাশি সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের অধীনে গঠিত কোনো ক্লাবের সদস্য হলে, পণ্য সরবরাহের ঠিকাদারি কাজে টেন্ডার জমা দিতে, আমদানি-রপ্তানির বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বা খুলনায় ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন ও উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি ফান্ড, পেনশন ফান্ড, অনুমোদিত সুপারএন্যুয়েশন ফান্ড এবং শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ব্যতীত অন্যান্য ফান্ডের রিটার্ন দাখিলের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
আর কর না দিলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মত সেবা বন্ধের প্রস্তাব রেখেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি আরো জানান, যে দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এসব সেবা নেয়া হবে, সেসব প্রতিষ্ঠান যদি সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র না দেখে সেবা দেয়, তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি