দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়াসহ খুলনা বিভাগ জুড়ে ঈদে সড়কপথে হাজারেরও বেশী আনফিট গাড়ি চলবে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে কিছু নেমে পড়েছে সড়কে। কিছু নামার অপেক্ষায়। এসব যানবাহনের কোনোটির আয়ুষ্কাল শেষ, কোনোটি ত্রুটিপূর্ণ। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন্ন ঈদযাত্রায় শামিল হবে এসব মোটরযানের একটা বড় অংশ। মাঝরাস্তায় নষ্ট হয়ে কিংবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বিশৃঙ্খল আর ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে দেশের সড়ক-মহাসড়ক।
বাংলাদেশে মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব মোটরযানের জন্য ফিটনেস সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মোটরযান পরীক্ষা করে এ সনদ দেয় বিআরটিএ। নিয়মিত ফিটনেস সনদ হালনাগাদ করতে হয়, দেশে এমন মোটরযানের সংখ্যা ১৫ লাখ ২৫ হাজার। বিআরটিএর তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনফিট গাড়ির সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৮ হাজার। অর্থাৎ প্রতি তিনটি মোটরযানের একটি আনফিট।
আবার যেসব মোটরযানের হালনাগাদ ফিটনেস সনদ রয়েছে, সেগুলো বাস্তবে রাস্তায় চলাচলের উপযোগী কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, একটি মোটরযানকে ফিটনেস সনদ দেয়ার আগে ৪২ থেকে ৬৫ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, ফিটনেস সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে এতগুলো পরীক্ষা মাত্র এক-দেড় মিনিটেই শেষ হয়ে যায়। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়েই ফিটনেস সনদ পেয়ে যাচ্ছেন গাড়ির মালিকরা। বিআরটিএ যেসব মোটরযানকে ফিটনেস সনদ দিয়েছে, পরীক্ষা করলে দেখা যাবে সেগুলোর একটা বড় অংশ রাস্তায় চলাচলের অযোগ্য।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় প্রায় দেড় কোটি লোকের বসবাস। আসছে ঈদে আন্তজেলা ধরে এসব মানুষ জেলার বাইরেও যাবে। একই সাথে যাবে জেলার বির্স্তীণ এলাকা পর্যন্ত। বর্তমান গণপরিবহন দিয়ে এত লোকের যাতায়াত নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সেখানে মেকাপ দিতে এসব ফিটনেস বিহীন পরিবহন নামাচ্ছে বিভিন্ন জেলার পরিবহন মালিক সংস্থাগুলো।
সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ঈদের আগে-পরে যাত্রীর চাপ বেশি থাকার সুযোগে সড়ক-মহাসড়কে আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাওয়া পুরনো যানবাহনও নেমে পড়বে। অন্যান্য বছরের মতো এবার ঈদ সামনে রেখে পুরনো আনফিট গাড়ি রঙ করে রাস্তায় নামানোর জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে পরিবহন ওয়ার্কশপগুলোয়।
হাইওয়ে পুলিশ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আনফিট গাড়ি দুভাবে মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। প্রথমত, ব্যস্ত মহাসড়কে হঠাৎ বিকল হয়ে। এতে বিকল হওয়া গাড়ির আরোহীরা তো মুশকিলে পড়েই, সড়ক দখল করে রাখায় তীব্র যানজটও হয়। দ্বিতীয়ত, আনফিট গাড়ির দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে বেশি। বেশির ভাগ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনের ফিটনেস ঠিক নেই। ব্রেক, চাকা, স্টিয়ারিং, গিয়ারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ দুর্বল থাকায় যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটান চালক। ব্যস্ত সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেও তীব্র হয়ে ওঠে যানজট।
বুয়েটের তথ্য বলছে, দেশে প্রতিদিন যত সড়ক দুর্ঘটনা হয়, তার প্রায় ২০ শতাংশের জন্য দায়ী আনফিট মোটরযান।
তবে বিআরটিএর কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়কে যেন কোনো ধরনের আনফিট গাড়ি চলাচল করতে না পারে, সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তত্পর থাকবে।এদিকে কুষ্টিয়া পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন কুষ্টিয়া-খুলনা মগাসড়ক ধরে নির্দ্দিষ্ট সংস্থার গাড়িগুলো চলাচল করে থাকে। যে গাড়িগুলোর মান মোটামুটি ভাল। তবে এর মধ্যে তারা যাতে খরাপা গাড়ি ঢুকিয়ে ট্রিপ না করে এজন্য পুলিশ সর্তক রয়েছে।
ঝিনাইদহ পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান এ জেলায় ইতোমধ্যে বেশকিছু গাড়ি মালিককে তারা সর্তক করেছেন আনফিট গাড়ি সড়কে না নামাতে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি