December 22, 2024, 12:39 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
একেবারেই গতি নেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ৫৩৭ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্পের অধীনে চলমান উন্নয়ন কাজ। ইতোমধ্যে চলে গেছে তিন বছর। করোনা পরিস্থিতি ও বর্তমান রডসহ কয়েকটি নির্মান জিনিসের দাম বৃদ্ধিকে দায়ি করা হলেও অভিযোগ উঠছে রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা বিবেচনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের অধীনে চলমান ৯টি ১০ তলা ভবন নির্মাণ ও সাতটি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের বেশির ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মেগাপ্রকল্পের অধীনে ক্যাম্পাসে ৯টি ভবনের কাজ শুরু হলেও বর্তমানে একটি ভবনের কাজ চলছে এবং বাকি দুটি ভবনে কয়েকজন শ্রমিক কোনোরকমে কাজ চালু রেখেছেন।
বাকি ছয়টি ভবনের কাজ পুরোপুরি বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদাররা। এসব ভবনের মধ্যে পাঁচটি ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হল, দুটি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার এবং একটি করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। ভবনগুলো নির্মাণে মোট ৪০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১০টি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের মধ্যে তিনটি ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাতটির মধ্যে একটি ভবনের কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অন্যগুলো চলছে ঢিমেতালে। শেষ তিন-চার মাস ধরে এসব কাজ বন্ধ রয়েছে।
প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে, ২০১৮ সালে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হলেও প্রথম তিন বছরে ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণ ছাড়া অন্য কাজ শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। গত বছরের শেষে এসে টেন্ডার সম্পন্ন করা হয়। ভবনগুলোর নির্মাণে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। কিন্তু ১০ তলা ভবনগুলোর একটিতে মাত্র ১০ শতাংশ কাজ হয়েছে। বাকিগুলো উল্লেখ করার মতো কোনো কাজ হয়নি বলে জানা গেছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এতে বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঢিলেমি ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় এর আগেও দুই ধাপে বরাদ্দ ফেরত দিতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
ঠিকাদারদের দাবি, রড, সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত বাজেটে তারা কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন না। তাঁরা নির্মাণসামগ্রীর মূল্য কমাতে সরকারের বিভিন্ন মহলে কথা বলছেন বলে জানান। অন্যথায় নতুন করে ভর্তুকি দাবি করছেন। তবে আগের বরাদ্দেই কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ চালু রাখলেও অন্যরা কেন পারবেন না—এমন প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সি সহিদ উদ্দিন মো. তারেক বলেন, ‘কাজ চালু রাখতে দফায় দফায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে আসছি, কিন্তু তাদের কাজে ফেরাতে পারছি না।
অন্যদিকে প্রায় দুবছর ছিল করোনা। প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করে সমন্বয় করতে হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ঠিকাদারদের অসহযোগীতাসুলভ মানমানসিকতাকে দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন এই ঠিকাদারী সংস্কৃতিটিই এমন। কিছু একটা হলেই এরা নির্মাণ কাজকে জিম্মি করে ফেলে। উন্নয়নকে আটকে দেয়। এটার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
তিনি বলেন কোন সমস্যা হলে সেটা কাজ শেষে সমন্বয় করা যেতে পারে। কিন্তু তাই বলে কাজ বন্ধ করে দিতে হবে কেন।
Leave a Reply