February 5, 2025, 12:06 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে বিপুল সংখ্যক এমবিবিএস চিকিৎসক। এই সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) একেএম হাফিজ আক্তার। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
রাজধানীর মালিবাগ, সাভার, কুমিল্লা থেকে পৃথক অভিযান চালিয়ে বুধবার (৬ এপ্রিল) ৬ জন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো— সার্টিফিকেট প্রদানকারী ‘প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’ নামের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক ভুয়া ডাক্তার নুরুল হক সরদার ওরফে শেখ গনি সরকার (৭২), মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৮), ডাক্তার মো. সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল (৩০), মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজ (৩৭), ডাক্তার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ (৩৮), দেবাশীষ কুন্ডু (৫২) । এসময় উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন ধরনের জাল সার্টিফিকেট।
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা কয়েকজন ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছি। সেইসঙ্গে যে প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিবিএস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম ডাক্তার মো. নুরুল হক সরকার। সে একজন ভুয়া চিকিৎসক। সে একাধারে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ভিসি। তার অনেকগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। শেখ গনি সরকার তার পরিচিতি রয়েছে। তার একটি ওয়েব পেজ, একটি পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার চটকদার বিজ্ঞাপন রয়েছে।’
গ্রেফতারকৃত ভুয়া চিকিৎসক নুরুল হক সরকার গোয়েন্দাদের জানায়, প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে সে এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এমবিবিএস এর প্রতিটি সার্টিফিকেটের জন্য সে ২৫ লাখ টাকা করে নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কতজনকে এমবিবিএস সার্টিফিকেট দিয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে। তার ব্যবহৃত কম্পিউটারটি আমরা জব্দ করেছি।
প্রচারণার কাজে তারা ভুয়া ওয়েবসাইট বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন, কম্পিউটারাইজড ক্যাম্পাস যা বাস্তবে অস্তিত্বহীন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিথ্যা আদেশ দেখিয়ে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছিল। তারা এমবিবিএস, বিডিএস, এমফিল, পিএইচডি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অ্যাডভোকেটশিপ— এধরনের ১৪৪টি বিষয়ের ওপর অসংখ্য সার্টিফিকেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। বাস্তবে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির কোনও অস্তিত্ব নেই। সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল, মাহফুজ এবং আমানুল্লাহ মাদ্রাসা থেকে দাখিল কামিল পরীক্ষা পাস করে এমবিবিএস’র সার্টিফিকেট নিয়েছে, যা কোনোভাবেই সম্ভব না। সুসজ্জিত চেম্বার এবং অনেকগুলো ভুয়া ডিগ্রি রয়েছে তাদের। সাইদুর রহমান নজরুল সাভারে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিল। মাহফুজ ডেন্টাল মেডিক্যাল থেকে পাস করে সার্টিফিকেট নিয়ে কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিল। এছাড়া, দেবাশীষ ডাক্তার পরিচয়ে টাঙ্গাইলে প্যাট্রিয়টিক আল্ট্রা মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে ‘বিটস ফর রুর্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিল। আমানুল্লাহও সেই প্রতিষ্ঠানে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল।
Leave a Reply