October 30, 2024, 8:04 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
চুয়াডাঙ্গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা নিজের দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন তার নিজ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে। বিষয়টি কয়েকদিন গোপন থাকলেও জানাজানি হয়ে যায় যখন নববর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়।
বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই শিক্ষিকা।
বরের নাম আব্দুর রহমান। সে সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের শিক্ষিকা শামসুন্নাহারের ছেলে। সে যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। আর কণে শারমিন খাতুন একই উপজেলার ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার আসুক আলীর মেয়ে।
বিষয়টি খোঁজ খবর নিতে আজ সোমবার সকালে জেলা সদরের বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান একদল সাংবাদিক। তারা দেখতে পান পঞ্চম শ্রেণির কক্ষে প্রথম বেঞ্চে বোরখা পরে ক্লাস করছে শারমিন খাতুন। তার হাতে এখনও রয়েছে বিয়ের মেহেদির রঙ।
বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে শারমিন খাতুন জানায়, ৮ দিন আগে তার বিয়ে হয়েছে রবের সাথে।
“এখন আমার বর আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আর আমি ক্লাস করতে এসেছি,” জানায় শারমিন।
শারমিন জানায় বিয়ের দিন তার স্কুলের ম্যাডাম (তার শাশুরি) তাদের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের সকল সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। পারিবারিকভাবে প্রস্তাবের মাধ্যমেই বিয়ে হয়েছে জানায় বাল্য বিয়ের শিকার মেয়েটি।
সে কোন প্রতিবাদ করেছিল কি না জানতে চাইলে মেয়েটি জানায় প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
সাংবাদিকরা যখন স্কুৃলে তখন ওই একই ক্লাসে ছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। তিনি প্রখমে বেশ ঘাবড়ে যান। পরে সামলে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন, জানান তার মা খুব অসুস্থ্য। মায়ের ইচ্ছা নাতি ছেলের বউ দেখবেন। মূলত তার ইচ্ছা পূরণ করতে ছেলের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। গত ২০ মার্চ এই সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে। কিন্তু ছেলে ও মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি হয়নি।
এটাতো বাল্য বিবাহ তিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা হয়ে কিভাবে এটা করেন জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে চাননি।
বিয়েটি পড়ান বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বাল্যবিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন তিনি কোন বাল্যবিয়ে পড়াননি। সঠিক কাগজপত্র যাচাই করেই তিনি এ কাজ করেছেন।
বিয়ের সময় তার সামনে কি কি কাগজ ছিল এবং স্বয়ং ছেলের মায়ের উদ্বৃতি দিয়ে কাজির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন তার আর কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বিষয়টি শুনে খুব অবাক হন।
তিনি বলেন একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে জড়িতদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply