দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
মেয়াদ উত্তীর্ণের দুই বছর পর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে কোন রকম কাউন্সিল ছাড়াই। এরপরও অভিযোগ উঠেছে সাধারণ সম্পাদকের বয়স নিয়ে। জেলা ছাত্রলীগ বলছে কেন্দ্রের নির্দেশক্রমেই কাউন্সিল ছাড়াই কমিটি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদকের বয়সের হেরফেরের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
গত বুধবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১ বছরের জন্য জীবন হাসানকে সভাপতি ও রাশেদ আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদন করতে বলে জেলা কমিটি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রায় ২৫টি আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে সম্মেলন ছাড়াই গতকাল রাতে ৪৮ সদস্যের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
নতুন কমিটির সভাপতি জীবন হাসান আগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ জানান করোনার কারনে কমিটি কাউন্সিল করে সম্পন্ন করা যায়নি। পরে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা এলে কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এদিকে, নতুন সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আলমের বিরুদ্ধে পদ পেতে বয়স হেরফেরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করা হয়েছে তার বয়স ৩০ বছরের বেশি এবং তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীও নন।
জেলা কমিটিতে জমা দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে রাশেদ আলম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগৃহীত জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দেন। সেখানে তার জন্ম তারিখ লেখা ১৬ অক্টোবর ১৯৯৩। চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের নিচে কোনো তারিখ লেখা নেই। অথচ তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মসাল ১৯৯১। ছাত্রলীগের পদ পেতে বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ২৯ বছর এবং দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের চলমান শিক্ষার্থী হতে হবে। কিন্তু নতুন সাধারণ সম্পাদকের বয়স ৩০ বছরের বেশি এবং তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীও নন।
অভিযোগ করা হয়েছেে জলা কমিটি যখন জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদন করতে বলে তখন রাশেদ জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দেন। তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র সেখানে দেননি।
এ বিষয়ে রাশেদ জানান তার জন্ম ১৯৯৩ সালেই। তিনি জানান বিষয়টি তদন্ত হলেই সত্যতা মিলবে।
নাম প্রকাশ না করে রাশেদের পরিবারের একজন সদস্য জানান ভোটার হতে ও জাতিয় পরিচয় পত্র নিতে রাশেদ বয়স বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন বিপদে পড়েছে।
নন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান ২০১৩ সালে জন্মনিবন্ধনটি প্রদান করা হয়েছে। তিনি তখন চেয়ারম্যান চিলেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিরিনা আক্তার বানু জানান নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য ডেটায় রাশেদ আলমের জন্ম তারিখ ১৯৯১ সালের ১৬ অক্টোবর। সেখানে জন্মনিবন্ধন–সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই।
সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান জাহাঙ্গীর বলেন, বয়স চুরি এক ধরনের নৈতিক স্খলন। আর এটা জানা সত্বেও তাকে ছাত্রলীগের পদ দেয়া হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ জানান তিনিও অভিযোগ পেয়েছেন। এটা প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি