December 22, 2024, 12:09 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাংলাদেশ ডায়াবেটিস রোগের উচ্চঝুঁকির একটি দেশ হলেও এখানে এটি প্রতিরোধ করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। কিন্তু সুযোগ আমরা যথেষ্ট কাজে লাগাচ্ছি না। উদাসীনতা কাজ করছে। এটি না দেশের জন্য মঙ্গল না সরকার বা জনগনের জন্য।
তারা বলেন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস চিকিৎসা যেমন জরুরি, তার চেয়েও বেশি জরুরি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সর্বাত্মক ও গভীর কর্মকান্ড। রাষ্ট্রকেই ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে এ কাজে নেতৃত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন স্তরের মানুষকে যুক্ত করে। পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে নগর-পরিকল্পনা, বিদ্যালয় স্থাপনসহ সব ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ মেটাবলিক রোগগুলো নিয়ন্ত্রণের কাঠামোগত উন্নতি করতে হবে।
কুষ্টিয়াতে ডায়াবেটিস নিয়ে একটি সায়েন্টিফিক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেছেন। কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস সমিতি (মুজিবর রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতাল) এ সেমিনারের আয়োজন করে। স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস সমিতির (মুজিবর রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতাল) সভাপতি বিশিষ্ট সংগঠক মতিউর রহমান লাল্টু।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এসআর খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি জাতিয় অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশ, জাইকার প্রতিনিধি রিও জ্যাকি, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যন্ট ডা. মুসা কবির। অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপন করেন ডায়াবেটিস ও এন্ড্রোক্রাইনোলজিস্ট প্রফেস ডা. ফারুক পাঠান।
প্রফেস ডা. ফারুক পাঠান কী-নোটে বলেন একটা সময় ছিল যখন আমরা সাধারণত ভাবতাম একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বাকি জীবন ডায়াবেটিস নিয়েই কাটাতে হবে এবং প্রহর গুনতে হবে যে কখন ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত জটিলতাগুলো দেখা দেয় এবং আমাদের জীবন নিভে যায়। কিন্তু এখন সময় বদরেছে। অনেক ধরনের চিকিৎসা আবিস্কৃত হয়েছে। অনেক পথ ও পদ্ধতি আমাদের বিকল্প হিসেবে আছে। ডায়াবেটিস নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। নতুন নতুন ওষুধ যেমন আবিষ্কৃত হয়েছে, তেমনি প্রতিরোধ-ব্যবস্থাপনার কৌশলও পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই সব স্তরের মানুষকে জেনে-বুঝে সচেতনভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কর্মযজ্ঞে নিজের সামর্থ্য অনুসারে অংশগ্রহণ করতে হবে।
তিনি দেখান প্রতি ১১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। মোট আক্রান্তের পরিমাণ ৪২৫ মিলিয়ন (২০১৯ সালের হিসেব)। তিনি বলেন পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিস রোগীর ৮৭ শতাংশ রয়েছেন উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে যেখান টাইপ ২ ডায়াবেটিসে বেশি সংখ্যা বেশী। বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে অন্যতম তার ভাষায় পৃথিবীতে বর্তমানে উচ্চ হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে। কিন্তু আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে।
এই বিপুলসংখ্যক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ও আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা করতে এখনই আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান টর্লিন। অনুষ্ঠানে চিকিৎসক, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply