December 22, 2024, 8:25 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার খোকসায় নির্বাচনী তফশীল ঘোষনার রাতে এলাকায় আধিপত্য নিতে এক সাবেত চেয়ারম্যানের পোষা বাহিনী ঘুমন্ত গ্রামবাসীর উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। ঘটনায় কমপক্ষে ২০টিবসত বাড়ী -দোকান ভাংচুর ও লুটতরাজ হয়।
বুুধবার রাত সাড়ে ১১ টার পরে উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের কলপাড়া, কাজীপাড়া ও ক্যানেল পাড়ায় এ হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে প্রায় ৩০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি ছোড়ে। হামলায় আহত ১৫ নারী পুরুষ স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভুক্ত ভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সন্ত্রাসীরা কাজী পাড়ার জিকে ব্রিজের উপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে ৫০-৬০ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর জহুরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাংচুর করে। রাত ২ টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘন্টা ধরে জহুরুল মেম্বরের সমর্থক হাফিজুল, সামছদ্দিন, বাটু, আফতাব নাসির মতিন, আজাদ, মহন, সোহরাবের বাড়িসহ কমপক্ষে ২০টি বাড়ি – দোকান ভাংচুর করে। এসব বাড়িতে থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় হামলা কারীরা।
গভীর রাতে হামলার সময় সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধা হাসিয়া খাতুনের গলায় অস্ত্র ধরে আলমারীর চাবি নেবার চেষ্টা করে। এসময় তার দুই মেয়ে সন্ত্রাসীদের পায়ে চেয়ে ধরে কান্নাকাটি করে। তাতেও রক্ষা পায়নি তার বাড়ি। ভাংচুর ও লুট হয়েছে।
কাজীর ব্রিজ এলাকার পানি উন্নয়ন বোডের জিকে খালের সরকারী জমিতে বসবাস করেন সমিরন ও রেশমা। তাদেও বাড়িও রক্ষা পায়নি ভাংচুর করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেশীর ঘর থেকে গরু লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। তারা জানান সন্ত্রাসীরা প্রায় তিন ঘন্টা ধরে হামলা চালায়। তারা আগের থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। তাদের দাবি করেন, হামলাকারীরা তার প্রতিবেশী আফতাব শেখের একটি গরু, বাইসাইকেল লুট করে নিয়ে গেছে।
জহুরুল মেম্বর জানান, ইউনিয় পরিষদের নির্বাচনের তফশীল ঘোষনার রাতে হামলা করবে বলে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা আগেই ঘোষনা দিয়েছিল। পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে কয়েকটি সন্ত্রাসী বাহীনি একহয়ে ঘুমন্ত গ্রমবাসীদের উপর হামলা চালিয়েছে। স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তিন ঘন্টা ধরে অসংখ্য গুলি চালিয়েছে। লুটপাট করেছে প্রতিটি বাড়িতে। হামলার শুরু থেকে তিনি থানা পুলিশকে একাধিকবার ফোন করেছেন। কিন্তু প্রশাসন এগিয়ে না আসায় তার লোকজন বেশী ক্ষতির শিকার হয়েছে।
ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাবলু জানান, রাতে হামলার বিষয়ে পুলিশকে তিনিও ফোন করেন। কিন্তু কোন প্রতিকার পান নি। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য সন্ত্রাসীরা ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা করেছে। তিনি এজন্য ঐ ইউনিয়নেরই সাবেক এক বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যান ও এক মেম্বরের বিরুদ্ধে এ ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগ আনেন।
এ ব্যাপারে ঐ সাবেক বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যানকে ফোনে পাওয়া যায়নি। জানা যায় তিনি বেশীরভাগ সময়ই ঢাকা থাকেন। সেখান থেকেই এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জটিলতা পাকান। তিনি এমনকি থানা ও আদালতও প্রভাবিত করে থাকেন।
এলাকার বিভিন্ন সূত্র বলছে সে এলাকায় সন্ত্রাসের মদদ দিতে ‘এস’ অদ্যাক্ষরের এক ব্যক্তিকে অস্ত্র কিনে দিয়েছে। ঐ ‘এস’ সন্ত্রাসী ঐ এলাকার সাবেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী একে ফরটি সেভেন রাইফেলসহ গ্রেফতার ও দুই সঙ্গীসহ ক্রসফায়ারে নিহত একদিলের সহযোগী। ক্রসফায়রের ভয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করে থেকে ঐ সাবেক চেয়ারম্যানের আশ্রয়ে আবার এলাকায় এসেছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, তিনি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে খোকসার বাইরে আছেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ্য ইউপি সদস্যকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তিনি ফিরে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।
Leave a Reply