জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
মাত্র ৮ বছর বয়সে পাকিস্তানে পাচার হন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার শিশুকন্যা কোমো খাতুন। সেখানে বিক্রি করা হয়েছিল আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বাবুপাড়ার মৃত শেখ মনির উদ্দীনের মেয়ে কোমো খাতুনকে। পাকিস্তানের করাচিতে বসবাসকারী কোমো খাতুনের এখন বয়স ৫৭ বছর।
গত ৩ দিন পূর্ব পাকিস্তান টুডে নামক ইউটিউব চ্যানেলে ঊর্দু ভাষায় পাকিস্তানি যুবক ওয়ালিউল্লাহ মারুফকে এক সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় এসব তথ্য জানান কোমো খাতুন। জীবন একবারের জন্য হলেও বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে ফেরার আকুতি প্রকাশ করেন তিনি।সাক্ষাৎকারের ভিডিওতে কোমো খাতুনের পাশে তার প্রতিবন্ধী স্বামীকে বসে থাকতে দেখা গেছে।
কোমো খাতুন বলেন, ১৯৭৫/৭৬ সালের দিকে
তার বয়স যখন ৮ বছর তখন পাকিস্তান নিয়ে গিয়ে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় ৫৫ হাজার টাকায়। যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেন তিনি তার প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে তার বিয়ে দেন। যখন বিয়ে হয় তখন কামার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর এবং প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির বয়স ছিল ৩০ বছর। তিনি গত ৪৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী স্বামীর সংসার করেছন।
কোমো খাতুন আরও জানান, তার ভাইয়ের সাথে শত্রুতার জের ধরে বাংলাদশী এক মহিলা তাকে ফুঁসলিয়ে ভারতে নিয়ে যান। পরে সড়কপথে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যান। সেখান ৩ বছর যাবৎ নানাভাব নির্যাতনের পর তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়। শুধু তিনি একা নন, সেই সময় আরও অনেক বাংলাদশী মেয়ে একসাথে এভাবে অপহরণের শিকার হন।
তিনি আরও বলেন, তারা ৫ বােন ও ২ ভাই। তাদের মধ্যে ৪ বােন ও ২ ভাই আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ায় থাকেন। তিনি মেজাে বােনের নাম বলেছেন আমিরন।
এদিকে, উর্দু ভাষায় এ সাক্ষাতকারর ভিডিওটি কয়েক দিন ধরে সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বাবুপাড়ার আলী আজগর সাচুর নজরে আসে। তিনি খুঁজে বের করেন পাচার হওয়া কোমো খাতুনের পরিবারকে।
সাবেক কাউন্সিলর বাবুপাড়ার আলী আজগর জানান,
ইতিমধ্যে কোমো খাতুনের বাবা শেখ মনির উদ্দীন মারা গেছেন। মারা গেছেন তার দু ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই ও ৫ বােনের এক বান। বেঁচে আছেন একমাত্র ভাই মজিবর রহমান। বোন কোমো খাতুনের সন্ধানের খবর পেয়ে আমার বাড়ি ছুটে আসেন তার দুই বোন সাজেদা খাতুন ও শুকুরন নছা।
কোমো খাতুনের স্মতিচারণ করে তার বোন সাজেদা খাতুন বলেন, কোমো ছিলেন সুন্দরী। তার মাথায় অনেক বড় চুল ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে পরিবারর লােকজন ভেবেছিলেন হয়তো মারা গেছেন তিনি। হারানা বােনকে ফিরে পেতে সকলের সহযাগিতা চান কামার দুই বোন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, পাকিস্তান টুডে নামক ইউটিউব চ্যানেলের ওয়ালিউল্লাহ মারুফ সহযোগিতা করলে খুব সহজে দেশে আসতে পারবেন কোমো খাতুন। পাকিস্তান- বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করলে সহজই তা সম্ভব হব। তাছাড়া, আমাদের সহযোগিতার প্রয়োজন হল তা করা হবে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি