December 22, 2024, 2:18 pm
স্পোর্টস ডেস্ক/
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চতুর্থ টি-২০তে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথমবারের মত সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ১৯.৩ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রান সংগ্রহ করে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯.১ ওভারে জয়ে বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেটের
৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সতর্ক ভাবে এগোচ্ছিল বাংলাদেশের ওপেনার লিটন-নাঈম। প্রথম দুই ওভারে লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম চার রান তোলেন।
তৃতীয় ওভারে কোল ম্যাককনচিকে মিডউইকেট দিয়ে চার মারেন লিটন। পরের বলেই উইকেটের পতন। ৬ রানে ডিপ মিডউইকেটে ফিন অ্যালেনের ক্যাচ হন লিটন।
ব্যাটে আসেন সাকিব। নাঈম-সাকিব জুটিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। চার বলের মধ্যে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমকে ফিরিয়ে দিলেন আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে ভোগানো এজাজ প্যাটেল। অপ্রয়োজনীয় শট খেলেই ফিরেছেন স্বাগতিকদের দুই ব্যাটিং ভরসা।
বাঁহাতি স্পিনারকে এজাজকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ইয়র্কার বানিয়ে স্টাম্পড হন সাকিব। ৮ বলে ১ চারে তিনি করেন ৮। দুটি ডট খেলে পরের বলে স্লগ করে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
দুই রান ছিল না। তবুও বিনা কারণে সেই চেষ্টায় গেলেন দুই ব্যাটসম্যান। সুযোগটা লুফে নিল নিউজিল্যান্ড। মোহাম্মদ নাঈম শেখকে রান আউট করে ভাঙল জুটি।
ব্লেয়ার টিকনারের বল পুল করে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে পাঠান নাঈম। কিপার টম ল্যাথামের গ্লাভসে জমার সময় বেশ দূরে ছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। শেষে মরিয়া হয়ে ডাইভ দিয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি, এর আগেই বেলস ফেলে দেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক। ভাঙে ৫০ বল স্থায়ী ৩৪ রানের জুটি। ৩৫ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২৯ রান করেন নাঈম।
এরপর ব্যাটে আসেন আফিফ। মাহমদুউল্লাহ ও আফিফের ব্যাটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান মাহমুদউল্লাহ এতে দলীয় রান দাঁড়ায় ৯৬। মাহমুদউল্লাহ (৪৩*) ও আফিফ (৬*)।
এরআগে ওপেনিংয়ে আসেন ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্র। তবে তাদের জুটিকে এক ওভার ও পিচে দাঁড়াতে দেননি টাইগার স্পিনার নাসুম আহমেদ।
প্রথম ওভারে ৫ম বলে উড়িয়ে মারেন রাচিন রবীন্দ্র। ছুটে গিয়ে বলটি লুফে নেন অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। এতেই দলী ও ব্যক্তিগত শূন্য রানেই ভাঙে কিউইদের ওপেনিং জুটি।
দ্বিতীয় ওভারে বলে আসে সাকিব দেন ১০ রান। ফের বলে এসে সেই সাইফউদ্দিনের কাছে ফিন অ্যালেনকে ক্যাঁচ বানিয়ে ফেরান নাসুম। ফেরা আগে ৮ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলেন এ কিউই ব্যাটসম্যান।
এরপর কিউই অধিনায়ক টম লাথামকে ২১ রানে স্ট্যাম্পিং করে ফেরান স্পিনার মাহাদী হাসান। ফের কিউইদের চেপে ধরলেন নাসুম আহমেদ। একই ওভারে পরপর হেনরি নিকোলসকে(১) বোল্ড ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে(০) ক্যাঁচ বানিয়ে ফেরান এ স্পিনার।
এরপর জ্বলে ওঠে কাটারমাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৬ তম ওভারের ফিজের দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারেন টম ব্লান্ডেল। কিন্তু বিধি বাম। বাজ পাখির মত উড়ে গিয়ে বলটি লুফে নে মোহাম্মদ নাঈম। ৪ না এ ঘরে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান। একই ওভারের পঞ্চম বলে ডিফেন্স করেন কোল ম্যাকনকি। তবে বলটি উঠে যায়। যা লাফ দিয়ে নিজেই লুফে নেন ফিজ। ০ রানে ফেরেন ম্যাকনকি।
শেষের দিকে উইকেটের দেখা পেলেন সাইফউদ্দিনও। এজাজ প্যাটেলকে ৪ রানে বোল্ড করেন এ পেসার।
এদিকে টি-২০তে সর্বোচ্চ উইকেটেরে রেকর্ডে লাসিথ মালিঙ্গাকে ছুঁতে এ ম্যাচে সাকিবের প্রয়োজন ছিল একটি উইকেট। প্রথম দুই ম্যাচে দুটি করে উইকেট নিয়ে মালিঙ্গার সঙ্গে ব্যবধান এক-এ নামিয়ে এনেছিলেন সাকিব। তবে তৃতীয় ম্যাচে উইকেট পাননি কোনো, ফলে থেমেছিলেন ১০৬ উইকেট নিয়েই।
আজ দ্বিতীয় ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন, তবে দেন ১০ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ১ রান দিলেও উইকেট পাননি কোনো। পরের দুই ওভারেও উইকেটশূন্য থেকেছেন সাকিব। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়েছেন তিনি। মালিঙ্গাকে ছোঁয়ার অপেক্ষাটা তাই আরেকটু বেড়েছে তার।
শেষ ওভারে উইল ইয়াং(৪৬) ও ব্লেয়ার টিকনারকে(২) ফিরিয়ে কিউইদের ৯৩ রানে থামিয়ে দেন মুস্তাফিজ। দলের হয়ে নাসুম আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান সর্বোচ্চ ৪টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ৯৩ (রাচিন ০, অ্যালেন ১২, ল্যাথাম ২১, ইয়াং ৪৬, নিকোলস ১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ব্লান্ডেল ৪, ম্যাকনকি ০, এজাজ ৪, টিকনার ২, বেনেট ০*; নাসুম ৪-০-১০-৪, সাকিব ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৪-১-২১-১, মুস্তাফিজ ৩.৩-০-১২-৪, সাইফ ৩-০-১৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)
বাংলাদেশ: ১৯.১ ওভারে ৯৬/৪ (নাঈম ২৯, লিটন ৬, সাকিব ৮, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*, আফিফ ৬*; বেনেট ৩-০-১৭-০, এজাজ ৪-০-৯-২, ম্যাকনকি ৩.১-০-৩৪-১, রাচিন ৪-০-৮-০, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩-০-১৩-০, টিকনার ২-০-১৩-০)
Leave a Reply