দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, খোকসা/
কুষ্টিয়ার খোকসায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পৌনে দুই বছর পর সমন্বয়ের মাধ্যমে গঠিত পূর্নাঙ্গ উপজেলা কমিটি ঘোষনা । পদ ভাগাভাগীর মধ্যদিয়ে পৌরসভা ও ইউনিয়ন কমিটি চুড়ান্ত হয়েছে।
দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে জেলার সবকটি উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনার জন্য দলের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সৌহাদ্য পূর্ন পরিবেশে সমন্বয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলীসহ খোকসা-কুমারখালী আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ উপস্থিত ছিলেন।
তবে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঘোষিত খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের অসম্পুর্ন কমিটির সভাপতি বাবুল আখতার ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক তারিকুল ইসলাম নিজেরা সমন্বয়ের মাধ্যমে পৌরসভারসহ ৯টি ইউনিয়নের কমিটি চুড়ান্ত করেছেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে গঠিত এসব কমিটি আগামী মঙ্গলবার অথবা বুধবার জেলা কমিটির কাছে জমা দেওয়া হবে। পৌর ও ইউনিয়ন কমিটি চুড়ান্ত হওয়ার আগেই সমন্বয়ের মাধ্যমে বিন্যাশ করা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির চুড়ান্ত ঘোষনা হতে পারে।
গত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর স্থানীয় হাই স্কুল মাঠে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মঞ্চদখল কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের দলীয় অফিস ভাংচুর করা হয়। অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপের পর সম্মেলন অনুষ্ঠত হয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীদের চাপের মুখে বাবুল আখতারকে সভাপতি ও প্রভাষক তারিকুল ইসলামকে সাধারন সম্পাদক করে কমিটির প্রধান ৬টি পদের বিপরিতে মনোনীতদের নাম ঘোষনা করা হয়। কিন্তু প্রায় পৌনে দুই বছর পার হয়ে গেলেও ১০১ সদস্যের উপজেলা কমিটির বাকী পদ গুলোসহ পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের কমিটি ঘোষনা বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে সোমবার সমন্বয় বৈঠকের মধ্যদিয়ে সাংগঠনিক সমস্যা দূর হতে যাচ্ছ।
সোমবার সারা দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয় ও কমিটি ঘোষনা নিয়ে জল্পনা কল্পনার অন্ত ছিল না। যার প্রভাব পরেছিল উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের চায়ের দোকান গুলো থেকে শুরু করে সর্বত্রই। সমন্বয় বৈঠকে পৌর ও ইউনিয়ন কমিটির তালিকা চুড়ান্ত হওয়ায় পর দুই অংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
প্রাথমিক যাচাই বাছায়ে খোকসা পৌর কমিটির সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মিজানুর রহমান বিটু, খোকসা ইউনিয়নে সভাপতি পদে আব্দুল বারিক মোল্লা ও সম্পাদক জিল্লুর রহমান, শিমুলিয়া ইউনিয়নে সভাপতি আব্দুল মজিদ ও সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, বেতবাড়িয়া ইউনিয়নে সভাপতি শফিকুল ইসলাম জমির ও সাধারণ সম্পাদক সবুজ আহম্মেদ, ওসমানপুর ইউনিয়ন সভাপতি রশির আহম্মেদ (বশির মাষ্টার) ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বাবলু, জানিপুর ইউনিয়নের সভাপতি সন্তোষ কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজিদ মেম্বর, জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী, শোমসপুর ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মজিদ মন্ডল ও সাধারন সম্পাদ রওশন আলী, আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সভাপতি মনিরুজ্জামান ইতবার ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর কবির বাবলু এবং গোপগ্রাম ইউনিয়নের সভাপিত ওহাব মুন্সী ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের নাম শোনা যাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক তারিকুল ইসলাম জানান, কোন কিছুই চুড়ান্ত নয়। সৌহাদ্য পূর্ন পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সমন্বয়ের ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। দুই একদিনের মধ্যে পূর্নাঙ্গ উপজেলা কমিটি ঘোষনা হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আকতারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার মুঠো ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়।
Leave a Reply