October 30, 2024, 8:02 pm
জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
চুয়াডাঙ্গায় আন্তঃজেলা মোবাইল ফোন ছিনতাই চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি খেলনা পিস্তল, ৬টি ব্র্যান্ডের দামী মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেল। তারা ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ রোববার ভোরে ঝিনাইদহ ও মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনের জানানো হয়, গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার উক্ত গ্রামে রাস্তার পাশে মোবাইলে ফ্রি ফায়ার ও লুডু গেমস খেলছিল কতিপয় যুবক ও কিশোরা। এসময় ৩/৪ জনের একটি দল পুলিশ পরিচয়ে তাদের আটক করে কিল ঘুষি ও চড় থাপ্পড় মারে। পরে খেলনা পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছে থাকা তিনটি দামী মোবাইল ফোন ছিনতাই করে পালিয়ে যায় তারা। গত ২৬ জুলাই সদর উপজেলার ভুলটিয়া ও কিরোনগাছি গ্রামে একইভাবে আরও তিনটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করে সংঘবদ্ধ চক্রটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত শনিবার সকালে বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন সদর উপজেলার উক্ত গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। পরে অভিযান শুরু করে সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) একরামুল হোসাইন, উপ-পরিদর্শক সামিম হাসান ও হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ রোববার ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ ও মহেশপুর এলাকায় পৃথক অভিযান চালানো হয়। এসময় আন্তঃজেলা মোবাইল ফোন ছিনতাই চক্রের মূলহোতা ইসমাইল খান আরিফ ও তার সহযোগী উত্তম কুমার ঘোষকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ উদ্ধার করা হয় একটি খেলনা পিস্তল, ছিনতাই হওয়া ৬টি মোবাইল ফোন ও তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল। গ্রেফতার হওয়া চক্রটির মূল হোতা ইসমাইল খান আরিফ (৩০)। সে ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের আনসার আলী খানের ছেলে। গ্রেফতার হওয়া অপর ব্যক্তি উত্তম কুমার ঘোষ (২৮) একই উপজেলার হামিদপুর গ্রামের সুবোধ ঘোষের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ১৭ জুলাই ও গত ২৬ জুলাই সদর উপজেলার উক্ত, ভুলটিয়া ও কিরোনগাছি গ্রামে কতিপয় কিশোর ও যুবকদের মারধর করে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনার পর গতকাল শনিবার সকালে উক্ত গ্রামের আনোয়ার হোসেন সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনগুলোর মধ্যে তার ছেলে সাকিব হোসেনের একটি ফোন ছিল। পরে অভিযান চালিয়ে চক্রটির মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটির বাকী সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। ওই ঘটনায় আজ সকাল সাড়ে ৮টায় সদর থানায় একটি নিয়মিত মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, চক্রটি শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয়, আশপাশের বিভিন্ন জেলায় একইভাবে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল। মূলত খেলনা পিস্তল উচিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনতাই করতো তারা। উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি অনলাইন মার্কেট প্লেস দারাজ থেকে কেনা বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা। তাদের আদালতে পাঠানোর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply