October 30, 2024, 8:02 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় ১৫ ঘন্টার ব্যবধানে দুটি ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দুটিই হত্যাকান্ড বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হলেও পুলিশ বলছে কুমারখালীর ঘটনাটি দূর্ঘটনা হতে পারে। পুলিশ জানাচ্ছে লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন এলেই প্রকৃত ঘটনা বোঝা যাবে।
মঙ্গলবার জেলার কুমারখালীতে একটি সেতুর ওপর থেকে নাসির উদ্দিন বিশ্বাস (৫০) নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, বুধবার মিরপুর উপজেলায় ভুট্টাক্ষেত থেকে উম্মে ফাতেমা (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায় মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাত ১১টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন সেতুর ওপর থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় পুলিশ ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নাসির উদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের নাউতি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী বিশ্বাসের ছেলে। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত নাসিরের ছোট ভাই বশির উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, শিলাইদহে ভাইয়ের এনএসবি নামে একটি ইটভাটা রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ১২-১৩ বছর পর চলতি জুলাই মাসে টেন্ডারের মাধ্যমে শিলাইদহ খেয়াঘাট ও শিলাইদহ বালুমহল ইজারা নেন তিনি। শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে তিনি এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগও চালিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেলযোগে শিলাইদহ থেকে শহরের হাউজিং এলাকায় নিজ বাসায় আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন বলে জানতে পারি।
নিহতের পরিবারের দাবি, শিলাইদহ খেয়াঘাট ও বালু মহালের ইজারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে নাসিরকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
নিহতের ভাতিজা বাবু জানান, দুর্ঘটনায় আহত হলে শরীরের বিভিন্ন স্থান আঘাত পাওয়ার কথা। কিন্তু তা নেই, শুধু বুকে আর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ নাসির উদ্দিনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে, বুধবার (১৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের ভাঙ্গা বটতলা এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে উম্মে ফাতেমার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত উম্মে ফাতেমা মিরপুর পৌরসভার ওয়াবদা পাড়া এলাকার খন্দকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে। সে মিরপুর বর্ডারগার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ফাতেমার বাবার খন্দকার সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ১১ টার সময় ভাত খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যায় ফাতেমা। রাত ২টার দিকে তার ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে খোঁজাখুঁজি করা হয়। না পেয়ে বুধবার (১৪ জুলাই) সকালে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। বিকেলে পাশের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।
Leave a Reply