দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনে বা আইসোলেশনে না নেয়া এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের অতিমাত্রার সংক্রমণ প্রবণতার কারণেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না রোগটিকে।
মাত্রই শেষ হয়ে যাওয়া জুন মাসটি যেন দেশবাসীর জন্য এক মহা-আতঙ্কের মাস ছিল। এ মাসে চারদিনের ব্যবধানে করোনায় একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং একদিনের সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে ২১ হাজার ৬২৯ রোগী শনাক্ত হলেও ফেব্রুয়ারিতে রোগী কমে হয় ১১ হাজার ৭৭ জন। কিন্তু মার্চ থেকে ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এপ্রিলে এক লাখ তিন হাজার ৯৫৭ জন রোগী শনাক্ত হয়। আর জুনে শনাক্ত হন এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন।
শনাক্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় পাঁচ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ বিধিনিষেধের ফলে সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সে বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে পড়ে। শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষ গ্রামমুখী হয়, যেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনও বালাই ছিল না। তাতে করে জনস্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করেন ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের সে আশঙ্কাই যেন এখন বাস্তবায়িত হয়েছে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ সাপ্তাহিক (২১ থেকে ২৭ জুন) প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫২ জেলা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে আছে— চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান; রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার সবকটি; রংপুর বিভাগের নীলফামারী এবং গাইবান্ধা ব্যতীত সব জেলা; খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সবকটি; ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর বাদে সব জেলা; সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা; ময়মনসিংহ বিভাগের সব জেলা এবং বরিশালের ভোলা ও পটুয়াখালী বাদে সব জেলা এই তালিকায় আছে। অতি উচ্চ ঝুঁকির তালিকার বাইরের ১২ জেলা আছে মধ্যম ঝুঁকিতে।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি রোগই বেড়েছে বরিশাল বিভাগে, যা আগের সপ্তাহ থেকে ১১৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। বরিশালের পর আছে যথাক্রমে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী। আগের সপ্তাহের তুলনায় সারাদেশে সংক্রমণ বেড়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এই সাত দিনে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬২৪ জনের; যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু খুলনায়, সংখ্যায় ১৭৮ জন। শতকের ওপর মৃত্যু আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগেও।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি